হিমেল আহমেদবাংলাদেশে সাক্ষরতার হার বাড়ছে। বাংলাদেশ শিক্ষিত হচ্ছে। শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। কিন্তু বর্তমানে এই প্রবাদবাক্য বাংলাদেশের জন্য বেমানান হয়ে পড়েছে! বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হলো আয়তন অনুযায়ী অতিরিক্ত জনসংখ্যা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাকের এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
দিন দিন জনসংখ্যার বিরাট এক অংশ শিক্ষিত হচ্ছে কিন্তু পক্ষান্তরে স্বাবলম্বী হতে পারছে না। এক কর্মসংস্থানের অভাব আর দ্বিতীয় বেকারত্ব। যা শিক্ষিতদেরও অশিক্ষিতদের কাতারেই সামিল করছে। ফলে শিক্ষা তার সঠিক মূল্যায়ন পেতে পারছে না। যা সত্যিই দুঃখজনক।
সেশন জট, রেজাল্টের অপেক্ষা ও চাকরি খুঁজতে গিয়ে চাকরিতে জয়েন করার মতো বয়স থাকে না। ফলে শিক্ষিত হয়েও বেকারত্বের অপবাদ গায়ে জড়াতে হচ্ছে। এটার আশু সমাধান করাই উচিত। আর বাংলাদেশে সরকারি চাকরি মানেই সোনার হরিণ! শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্যেও বিরাট অঙ্কের টাকা ঘুষ না দেওয়ার কারণে চাকরি হয় না অধিকাংশই। সরকার এবং প্রশাসন বরাবরই ঘুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও পর্দার আড়ালে এখনো ঘুষ প্রথা চালুই আছে। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিক্তিতে সম্পূর্ণ ঘুষবিহীন চাকরির ব্যবস্থা করা উচিত।
দেশের প্রতিটি সরকারি সেক্টরে, অফিস কার্যালয়ে ঘুষ প্রথার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকার যতই দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দুর্নীতি যেন ততই বাড়ছে! দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি তার কার্যকারিতা হারাতে বসেছে। সরকারকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের শিক্ষিত তরুণদের কর্মহীন রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। জনসংখ্যার হিসেব মতে দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক তরুণ। যাদের কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে ভাগীদার করা সম্ভব। অধিক জনসংখ্যা সমস্যা নয় অধিক জনসংখ্যাই বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনায় পরিণত হতে পারে।
অনেকে আছেন যারা চাকরির পিছনে না ঘুরে নিজ নিজ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে নিজেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কেউ খামার বানিয়েছেন, কেউ মাছ চাষ করছেন, কেউ কেউ বাসাবাড়িতেই বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সব বেকারদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রচেষ্টা করা উচিত। নিজ মেধা মননে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাই আত্মনির্ভরশীল হওয়াটা বিরাট একটি অর্জন। এতে করে সরকারের ওপর চাপ কমবে, বিপরীতে দেশে বেকারত্ব কমে যাবে। শিক্ষা বড়ো একটি গুণ। সেটা শুধু চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োগের কোনো দাবিদার নয়। শিক্ষাকে ব্যবহার করে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে আমাদের। জনসংখ্যার সঙ্গে সমতা রেখে কর্মসংস্থান সৃষ্টি অসম্ভব। তাই সরকারের উচিত যারা নিজেই কিছু করতে চায় তাদের পর্যাপ্ত সাহায্য করা। বেকারত্ব জাতির অভিশাপ স্বরূপ। তাই সরকারের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে বেকারত্ব দূরীকরণে এগিয়ে আসা।
লেখক :হিমেল আহমেদ,শিক্ষার্থী, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া