শহুরে শিশুদের বেশির ভাগ সময় দখল করে রাখে স্মার্টফোন তথা তথ্য-প্রযুক্তি। শিশুরা সাধারণত মোবাইল, টেলিভিশন, স্মার্টফোন, ট্যাব, ইউটিউবে সময় কাটায়। অনেকেই এসব ভালোভাবে দেখে। কিন্তু প্রযুক্তির কারণে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখছে না।
প্রযুক্তির এসব পণ্য থেকে শিশুদের দূরে রাখার জন্য দেশে দেশে অভিভাবকরা উদ্যোগ নিচ্ছেন। বহির্বিশ্বের অনেক দেশেই স্কুলে মোবাইল ফোন এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রায়ই দেখা যায়, অভিভাবকরা বাচ্চাকে শান্ত রাখার জন্য তার হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব ধরিয়ে দেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
গান, কার্টুন বা মজার ভিডিও চালিয়ে দিয়ে তাকে শান্ত রাখা হয়। আপনার-আমার সবার বাসায়ই এই চিত্র এখন নিত্যদিনের। স্মার্টফোনের কল্যাণে শিশুদের শান্ত রাখা, খাওয়ানো, এমনকি বর্ণমালা ও ছড়া শেখানোর কাজটিও মা-বাবার জন্য সহজ ও স্বস্তিদায়ক হয়ে উঠেছে। বিপরীতে স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে শিশুদের। বড়দের উদাসীনতা বা অবহেলায় বাচ্চারা মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে; যার প্রভাব ও কুফল খুবই ভয়ংকর।
কারণ স্মার্টফোনের আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই বিপজ্জনক। অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারে স্নায়ু দুর্বল হয়, মেজাজ খিটখিটে ও রক্তের চাপ বেড়ে যায়। দেহ ধীরে ধীরে ক্লান্ত ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। নিয়মিত ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটায়। স্ক্রিনের রেডিয়েশন প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, শিশুদের জন্য তা বেশি ক্ষতিকর, যা মস্তিষ্কের বিকাশকে ব্যাহত করে। প্রযুক্তি আসক্তির ফলে শিশুদের স্থূলতাও বাড়ছে। প্রযুক্তি যেন অভিশাপ না হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগ।
লেখক: নিগার সুলতানা সুপ্তি,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।