সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় শূন্য পদের তথ্য কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ দ্রুত হলেও বেতন-কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধার কারণে এখন সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ সবার। সরকারি চাকরির একটি বিজ্ঞাপন পেলেই পড়ছে লাখ লাখ আবেদন। এমন অবস্থার মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি গত ৪ মার্চ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থায় পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, তরুণ যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়াকে বর্তমান সরকার বিশেষ অঙ্গীকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার পাশাপাশি সরকারি দফতরসমূহে শূন্যপদে জনবল নিয়োগের মাধ্যমে সরকারের এ অঙ্গীকার অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে সময়াবদ্ধ ও সক্রিয় কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আওতাধীন দফতর/সংস্থাসমূহে বিদ্যমান শূন্যপদ পূরণের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
‘প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে সরকারি দপ্তরসমূহে দ্রুত শূন্যপদ পূরণের সদয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় তিনি এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সানুগ্রহ অনুশাসন প্রদান করেন। উল্লেখ করা আবশ্যক যে, এ অনুশাসন গত ২৫ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত আগামী ৫ বছরের মধ্যে ১ কোটি ২৮ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।’
চিঠিতে বলা হয়, অনতিবিলম্বে আপনার মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আওতাধীন দফতর/সংস্থাসমূহে বিদ্যমান শূন্যপদের যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রণয়নের জন্য আপনার ব্যক্তিগত মনযোগ আকর্ষণ করছি। এ সব শূন্যপদে কত দিনের মধ্যে জনবল নিয়োগ সম্ভব তার একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা থাকা আবশ্যক। বিদ্যমান শূন্যপদের তথ্য ও এ সব শূন্যপদ পূরণের জন্য প্রণীত কর্মপরিকল্পনা আগামী ২০ মার্চের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
‘প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ নির্দেশনা ও অনুশাসন সময়বদ্ধভাবে প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতি সরকারের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি সহজেই পূরণ করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এক্ষেত্রে আপনার এবং আপনার মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন সব সহকর্মীর আন্তরিক সক্রিয়তা ও অব্যাহত সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ রইলো।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি পেয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো অধীন দফতর-সংস্থায় চিঠি দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে।
আর সরকারি চাকরিতে শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় চার লাখ। গতবছরের জুলাইয়ে সংসদের প্রশ্ন উত্তরের একটি তথ্যে জানা যায়, সরকারি চাকরিতে ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৪৮টি পদ শূন্য। তবে বর্তমানে এ সংখ্যা চার লাখে ছাড়িয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
বর্তমানে দেশে বেকারদের সংখ্যা ২৫-৩০ লাখ বলে বিভিন্ন তথ্যে জানা গেছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান জানিয়েছেন, সর্বশেষ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সারা দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। এ বেকারদের মধ্যে ১০ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী যারা উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস। অর্থাৎ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ।