শেষ ভাল তো সবই ভাল - দৈনিকশিক্ষা

শেষ ভাল তো সবই ভাল

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী |

একটি প্রচলিত প্রবাদ বাক্য-শেষ ভাল যার, সব ভাল তার। কার্যক্ষেত্রে হয় ও তাই। আমাদের পূর্ব-পুরুষ মুরব্বিজনেরা কথায় কথায় প্রবাদ প্রবচন ব্যবহার করতেন। আমরা তাদের তুলনায় কম হলেও প্রয়োজনে এ সব প্রবাদ প্রবচন যে একেবারে ব্যবহার করিনা , তা কিন্তু নয়।

ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্ষালে আমাদের শিক্ষা বান্ধব সরকারকে একটি ধন্যবাদ দেয়া দরকার এজন্যে যে-তারা বিদায়ী বছরের শেষ দিনটিতে শিক্ষাক্ষেত্রে এক অতি শুভ একটি কাজ সম্পাদন করেছেন। তা হলো-গত ৩১ এ ডিসেম্বর ১৩-১১-১১ ইং তারিখের এমপিও না দেয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি উঠিয়ে সাত হাজারের ওপরে শিক্ষককে এমপিও দেবার জিও (সরকারি আদেশ) জারি হয়েছে। তাতে সাত হাজারের বেশি পরিবারের আপাত দুশ্চিন্তার কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এ সংবাদে খুবই উচ্ছসিত হয়েছি। বিলম্বে হলে ও বছরের শেষ দিনে এ পরম শুভ কাজটি সম্পাদনের জন্য সরকারকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা মিশ্রিত অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই।

এ কালো প্রজ্ঞাপনটির যাঁতাকলে এতদিন পিষ্ট হয়েছেন বিজ্ঞানের শিক্ষক, আইসিটি শিক্ষক, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং-এর মত আবশ্যিক বিষয় সমুহের শিক্ষক এবং শাখা শিক্ষকগণ। বিধিমোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ও এমপিও না পাবার কারণে এ সব মানুষ গড়ার কারিগর তাদের পরিবার-পরিজন নিযে পাঁচ ছ’টি বছর কী দু:সহ জীবন যাপন করেছেন, সে কেবল তারা ও আল্লাহ মা’বুদ ছাড়া আর কে জেনেছে ? না খেয়ে উপোস থেকে ও তারা যথারীতি দায়িত্ব পালন করেছেন এবং নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের দাবি আদায়ে সোচ্চার থেকেছেন। এ ক্ষেত্রে আইসিটি শিক্ষকগণ প্রশংসনীয় ভুমিকা পালন করেন। নিজেদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ ও আপোসহীন থেকে সাফল্য অর্জন করার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মহোদয়গণকে বিশেষ করে নন এমপিও আইসিটি শিক্ষকদের শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানাতে হয়। শিক্ষক আন্দোলনের ইতিহাসে তারা অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।

দেশে এখনো লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী স্বীকৃতি প্রাপ্ত স্কুল-কলেজে চাকুরী করে বেতন পান না। তাদের অনেকে এভাবে পনর-বিশ বছর ধরে অনাহারে ও অর্ধাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে আছেন । তারা এখন নিজেদের দাবি আদায়ে অনশনে রাজপথে। এ সব নন এমপিও শিক্ষকদের অবিলম্বে এমপিও’র দাবি পূরণ করা সরকারের একটি অপরিহার্য কাজ ও নৈতিক দায়িত্ব বটে ।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বোশেখি ভাতা, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং সর্বোপরি সব স্কুল-কলেজ একত্রে জাতীয়করণের বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী চরম হতাশায় আছেন। তারা স্মারকলিপি প্রদান করেছেন অনেকবার। মানববন্ধন করেছেন বহুবার। সমাবেশ-মহাসমাবেশ কিছুই বাদ দেননি। সরকারের একটানা দু’ মেয়াদের শেষ বছরে তারা চুড়ান্ত ও লাগাতার আন্দোলনের দিকে এগুচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হয় । তারা উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন যে, বিচ্ছিন্ন কর্মসুচি দিয়ে কোন কিছু আদায় হয় না। সর্ব সাম্প্রতিক নন এমপিও আইসিটি শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও সাফল্য সে দিকেই সকলকে ইঙ্গিত দেয় । তাই শিক্ষক সমিতিগুলোর মধ্যে স্কুল-কলেজ একত্রে জাতীয়করণের আন্দোলনে ঐক্যের সূর বাজতে শুরু করেছে । জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এর অন্য কোন বিকল্প তাদের সামনে নেই।

খ্রিস্টীয় ২০১৮ সাল বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের টানা দু’ মেয়াদের শেষ বছর। আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এ সরকারের সাফল্য প্রচুর। শিক্ষকদের ও এ সরকার একেবারে কম কিছু করেনি। তদুপরি তাদের বর্তমান মেয়াদের শেষ বছরে নন এমপিও শিক্ষকদের এমপিও প্রদান করে সব স্কুল-কলেজ একত্রে জাতীয়করণ করলে শিক্ষায় তাদের সব অর্জন চির অম্লান হয়ে থাকবে। এ সরকার ইচ্ছে করলে তা করতে পারবে – এ বিশ্বাস সকলের। সেদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন-‘দশটি পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষমতা আমাদের আছে।’ নি:সন্দেহে এ উক্তিটি আমাদের জাতীয় সক্ষমতা ও অগ্রগতির স্মারক বহন করে ।

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী: অধ্যক্ষ, চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কানাইঘাট, সিলেট এবং দৈনিক শিক্ষার নিজস্ব সংবাদ বিশ্লেষক।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043830871582031