শ্রুতি লেখক না পাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছে না টাঙ্গাইলের নাগরপুরের আফসার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল হাসিব। হাত থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মত লিখতে পারে না সে। তাই এসএসসি পরীক্ষায় শ্রুতি লেখকের আবেদন করলেও তা গ্রহণ করেনি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু, জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় শ্রুতি লেখকের সাহায্য পেয়েছিলো হাসিব।
হাসিবের জন্য শ্রুতিলেখকের জন্য ঢাকা বোর্ডে আবেদন নিয়ে এসেছিলেন তার বাবা একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মতিউর রহমান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বোর্ড অফিসে তিনি দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আমার ছেলে আল হাসিব একজন প্রতিবন্ধী। ছোটবেলায় জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলো। তার মস্তিষ্কের কিছু কোষ অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে একটি পা ও একটি হাত পুরো অকেজো। বাম হাতের কয়েকটি আঙ্গুল ঠিক থাকলেও তা দিয়ে পাবলিক পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। ঠিকমতো লিখতে পারে না স।
তিনি বলেন, ঢাকা বোর্ডের আবেদন নিয়ে এসেছিলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেছেন, দুই হাত না থাকলে এবং চোখে না দেখলেই কেবল শ্রুতিলেখক পাওয়া যাবে। তাই হাসিবের জন্য শ্রুতি লেখক না দিয়ে পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
হাসিবের পিতা মতিউর বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবন্ধী আইডি কার্ড রয়েছে হাসিবের। হাত থাকলেও লিখতে পারে না। প্রতিবন্ধীর সংজ্ঞার ফাঁদে পড়ে আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না।
‘মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন আমার ছেলেকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হোক,’ বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুসারে তার সাহায্যকারী হিসেবে শ্রুতিলেখক অনুমোদন করা সম্ভব হচ্ছে না। পরীক্ষার্থীর হাত অকেঁজো তা আবেদনেও উল্লেখ করা হয়নি। ডাক্তারী সনদে উল্লেখ্য করা হয়েছে লিখতে অসুবিধা হয় তার। সে ধীরে লিখতে পারে। সে প্রেক্ষিতে তার জন্য পরীক্ষার সময় ৩০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরণের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় এসএসসি পরীক্ষা প্রদানের সুযোগ দেয়া হয়েছে।