শ্রেণিকক্ষ সংকটে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ পাঠদান - দৈনিকশিক্ষা

শ্রেণিকক্ষ সংকটে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ পাঠদান

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি |

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার একটি স্কুল ‘মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়টিতে কক্ষ সংকটের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে বসছে শিক্ষার্থীরা। কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয়ের সব কিছুই থাকে নিরাপত্তাহীন অবস্থায়।

দূর থেকে মনে হয় ফাঁকা মাঠের মধ্যে রাস্তার পাশে কোনো সাপ্তাহিক হাট বসেছে। গাছের নিচে ইটের পুরাতন কক্ষের প্রাচীর কোথাও ভেঙে গেছে, আবার টিনের ছাউনির কোথাও টিন উড়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। আসলে এটি হাট নয়, বিদ্যালয়।

পরিত্যক্ত এই ভবন যেকোনো সময় ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকার কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত কক্ষেই পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বারবার অবগত করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল গফুর জানান, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এই অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই অঞ্চলের শিক্ষানুরাগী কয়েকজন ব্যক্তির চেষ্টায় এই বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু। সেই সময়ে এখানে ইট ও টিনের ছাউনি দিয়ে চারটি কক্ষ তৈরি করে শুরু করা হয় বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ফলাফলে কোনো ফেল নেই এবং প্রতিবছর এই বিদ্যালয় থেকে একাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেয়ে থাকে। অবহেলিত এই অঞ্চলে অনেক বছর জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়ে আসলেও এখনও এই বিদ্যাপিঠটিতে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি।


 
তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই বিদ্যাপিঠ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রেণিকক্ষ সংকট। কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত কক্ষেই গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অনেক চেষ্টা করে একটি একতলা ভবন পেলেও দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় বর্তমানে তাও খুব নাজুক। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। বিজ্ঞানাগার না থাকার কারণে লাখ লাখ টাকা মূল্যের বৈজ্ঞানিক উপকরণ নষ্ট হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষকদের জন্য নেই আলাদা কক্ষ। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। ঝড়ে পরিত্যক্ত মাটির ভবনের টিনগুলো উড়ে যাওয়ায় বার বার বিপাকে পড়তে হয়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফিয়া আক্তার, ফাইম শাহরিয়ার রিজভীসহ অনেকেই জানায়, শ্রেণিকক্ষের অভাবে পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই গাদাগাদি করে ক্লাস করছে তারা। বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা প্রাচীর, মেয়েদের জন্য নেই কমনরুম ও ওয়াশরুম, আধুনিক মানসম্মত বহুতল ভবন, নেই শেখ রাসেল কম্পিউটার ল্যাব ও গ্রন্থাগার। যার কারণে তারা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে পাঠ গ্রহণ করতে চায় শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শুকবর আলী বলেন, আমরা অনেকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এই সমস্যার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি। যদি এই পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে সম্প্রসারণ করে আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ করা হয় বা শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে একটি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে তারা পাঠ গ্রহণ করতে পারবে। ফলে এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং ঝড়ে পড়া অনেক কমে যাবে।

রাণীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল মামুন বলেন, এই বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। আশা রাখি এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061500072479248