করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও। এ অবস্থায় তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাথমিকের ক্লাস রুটিনও প্রকাশ করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী দেশসেরা শিক্ষকদের নেয়া ক্লাস রেকর্ড করে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে।
জানা গেছে, রুটিন মোতাবেক তৃতীয় শ্রেণির গণিত ক্লাস নেন একজন শিক্ষিকা। সেখানে তিনটি সংখ্যা ৪১৬, ২৫৯ ও ৩৯ যোগ করে দেখানো হয়। এর যোগফল হওয়ার কথা ৭১৪। কিন্তু ওই শিক্ষিকা অদ্ভূত নিয়মে সেখানে যোগফল দেখান ৬৮৪।
আরও পড়ুন : প্রতিমন্ত্রীর সামনে ‘ইংলিশ’ বানান পারলেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা (ভিডিও)
ওই যোগফলের ভিডিও এবং ছবি পরবর্তীতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে এই ভুল নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। হাবিবুর নামের একজন ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘তারাও শিক্ষক। আজকে বিটিভির ক্লাস।’ ওই স্ট্যাটাসে বাবুল আহসান মন্তব্য করেছেন, ‘এদের মতো কয়েকজন শিক্ষক এর জন্য গোটা শিক্ষক সমাজ আজ লজ্জিত।’
অনেকে বিষয়টি নিয়ে হাস্যরসও করেছেন। জামিলুর রহমান নামে একজন ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এই যোগ অংক যদি আমি না শিখি তা হলে তো আমাকে ... দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেবে। আল্লাহ তুমি রক্ষা করো।’
আবার এই ভুলের খবর ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুকে শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। একে অপরকে দোষারোপ করে বলতে থাকেন সামান্য ভুলের জন্য এত সমালোচনা কেন? আবার শামসুদ্দিন নামের একজন শিক্ষক ভুল যোগ করা শিক্ষিকার পক্ষে সাফাই গাইছেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি শিক্ষিকার পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বলে অন্যান্য শিক্ষকরা অভিযোগ করছেন।
প্রবীন শিক্ষকরা বলেন, কোটা আর অবহেলার কারনে শিক্ষার ভিত্তিগড়ার দায়িত্বে থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগের কোনো পদ্ধতি আজ এত বছরেও গ্রহণ করা হলো না। তাই কোনও রকমে টেনেটুনে এসএসসি পাস করা হাজার হাাজার নারী কোটা সুবিধায় শিক্ষকতা পদে ঢুকেছেন। তাদের হাতে প্রাথমিক শিক্ষার ভিত নষ্ট হচ্ছে। আর কতিপয় শিক্ষক নেতা এদের সাফাই গেয়ে চলছেন টাকার বিনিময়ে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শ্রেণি কার্যক্রম টেলিভিশন ও অনলাইনে প্রচার করা হচ্ছে। ষষ্ট থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিকের শ্রেণি কার্যক্রম সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু হয় গত ২৯ মার্চ থেকে।
আর প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির শ্রেণি কার্যক্রম সংসদ টেলিভিশনে শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল থেকে।