অভিনব কৌশলে জন্মসনদ জালিয়াতি করে এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে বিয়েবাড়িতে গেলেও ভুয়া সনদ দেখিয়ে প্রশাসনের চোখেও দেয়া হয়েছে ধুলো। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় এ জালিয়াতি সংগঠিত হয়েছে। ছাত্রীর সহপাঠীদের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এদিকে জন্মসনদে বয়স বদলিয়ে বাল্য বিয়ে দেয়ার কোন কার্যকর পদক্ষেপও নিতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারা।
সম্পতি নওগাঁর রানীনগর উপজেলা প্রশাসন একটি বাল্য বিয়ের হচ্ছে বলে খবর পায় উপজেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রামে কনে হাফিজা বানুর বাড়িতে যান কর্মকর্তারা। সে সময় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনকে জন্ম সনদ দেখানো হয়। যে জন্ম সনদে কিশোরীর বয়স বিবাহ যোগ্য দেখানো হয়েছে। ফলে উপজেলা প্রশাসন কোন আইনানুগ পদক্ষেপ না নিয়েই ফিরে আসেন। এরপর ধুমধাম করেই শেষ হয় বিয়ে।
এরপরই ঘটনাটি অনুসন্ধানে নামেন কয়েকজন নওগাঁ সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা। তারা, হাফিজা বানুর সঠিক বয়স জানতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তারা পৃথক দুটি জন্ম সনদ আবিস্কার করেন। একটি সনদ অনুযায়ী ছাত্রীর বয়স ১৮ দেখানো হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রেকর্ডপত্র ও জন্মসনদে তার বয়স ১৬।
অভিযোগ আছে, একইভাবে বিবাহ রেজিষ্টার কাজিদের পরামর্শে ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় জন্ম সনদে বয়স বাড়িয়ে প্রশাসনের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে একের পর এক বাল্য বিয়ে হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হাসমত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই জন্ম সনদ আমি প্রদান করিনি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি হয়তোবা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না। একটি জন্ম সনদ ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ইস্যু করা আর অন্যটি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ইস্যু করা হয়েছে জানালে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাল্যবিবাহের অভিযোগের ভিত্তিতে বিয়ে বাড়িতে আমি গিয়েছিলাম কিন্তু মেয়েপক্ষ আমাদের একটি জন্ম সনদ দেখায় তাতে মেয়ে বিবাহ যোগ্য। পরে যখন জানতে পারি এটি ভুয়া ছিল তখন স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জবাব দেয়ার জন্য লিখিতভাবে বলা হয়েছে।