গোপালগঞ্জ শহরের এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানমের বিরুদ্ধে আনা ১৪ অভিযোগের সবগুলোরই সত্যতা মিলেছে। এমন তথ্যই জানিয়েছেন অভিযোগ তদন্তে গঠিত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ৩ সদস্যের কমিটি।
জানা যায়, এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানমের বিরুদ্ধে ৩শ টাকা করে ভর্তি ফরম বিক্রি ও ৪৬০ থেকে ৫০০ টাকা করে পরীক্ষার ফি নেয়াসহ ১৪টি অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক ও ভুক্তভোগী অভিভাবক।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে বেশকিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ওই প্রধান শিক্ষক। এরপরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সেকেন্দার শেখ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানমের বিরুদ্ধে সরকারি নীতি উপেক্ষা করে স্কুলের ১২শ শিক্ষার্থীর নিকট বছরে ১৮ লাখ টাকা ফি ও ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ আর ৩ লাখ টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ করেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা, শিক্ষার্থীদের টাকায় রাখা দুই ঝাড়ুদারকে নিজের কাজে ব্যস্ত রাখা, স্কুলে রান্না করানো, স্কুলোর ফ্রিজে মাছ মাংস মুজদ করে রাখা, কোনো ক্লাস না করানো, স্কুলের উপকরণের টাকা আত্মসাৎ, নানা অজুহাতে শিক্ষকদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় ও কর্মসূচির বাইরে নিজের ইচ্ছেমতো অনুষ্ঠান করা, রমজানের ছুটিতেও শিক্ষকদের স্কুলে আসতে বাধ্য করা, অনেক রাত পর্যন্ত স্কুলে অন্যান্য শিক্ষকদেরকেও আটকে রাখা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহারসহ ১৪টি অনিয়মের অভিযোগের আছে তাদের বিরুদ্ধে।
তদন্ত করে সবগুলো অভিযোগেরই সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। তিনি বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের কাছে কিছু কাগজপত্র চাওয়ার পরও,তিনি সেসব দেননি।
জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সুরাইয়া খানমের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগেরই প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান।
প্রসঙ্গত প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানম এতই প্রভাবশালী যে, তার বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্য দিলে বুয়েট ছাত্র আবরারের পরিণতি বরণ করতে হবে। এজন্য সম্মুখে কারো পক্ষেই সাক্ষ্য দেয়া সম্ভব হবে না বলেও ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।