পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মাদরাসায় ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম কলারন আজাহার আলী দাখিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
মাদরাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর ধরে এই মাদরাসাটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বালিপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান। গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদের উপস্থিতিতে ব্যবস্থাপনা কমিটির নতুন সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মিজান। শিক্ষকদেরকে হুমকি দিতে থাকেন। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান মঙ্গলবার মাদরাসাটি বন্ধ রাখেন।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে মাদরাসার অফিস কক্ষে এসে মাদরাসার সুপার আব্দুস সালামের কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজগপত্র দেখতে চান মিজান। এসময় সুপার সব নথিপত্র বিকালে একটি কপি তাকে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু তারপরেও ওই সময়েই সব কিছু তাকে দেখাতে চাপ সৃষ্টি করেন। চাপের মুখে পড়ে মিজানকে সব নথিপত্র দেখান সুপার। এসময় কাগজপত্র দেখতে দেখতে সব গুছিয়ে নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায় মিজান। এসময় সুপার আব্দুস সালাম তার পিছু নিতে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। একটু পরে মিজান তার লোকজন নিয়ে ফিরে এসে হামলা চালান। মাদরাসা ভবনে সবাইকে অবরুদ্ধ করে শ্রেণি ও অফিস কক্ষে ভাংচুর করেন মিজান ও তার লোকজন। এসময় মিজানের হাতে বড় একটি দা ছিল বলে অভিযোগ করেন মাদরাসা সুপার আব্দুস সালাম।
এ বিষয়ে উত্তর পশ্চিম কলারন আজাহার আলী দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা মো. আব্দুস সালাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বেশ কিছু লোকজন নিয়ে মাদরাসায় এসে হামলা চালান এই যুবলীগ নেতা। এসময় মাদরাসার বেশ কয়েকটি শ্রেণি কক্ষের আসবাবপত্র পিটিয়ে ও কুপিয়ে ভাংচুর করেন মিজান ও তাঁর লোকজন। এমনকি মাদরাসার অফিস কক্ষে হামলা চালিয়ে বেশ কিছু কাগজপত্র লুটে নেন তিনি। সেখানেও ভাংচুর করেন তাঁরা। এসময় শিক্ষকদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানালে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে, অভিযুক্ত মিজানুর রহমান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দৈনিক শিক্ষাডটকমকে তিনি বলেন,‘আমার নেতৃত্বে মাদরাসায় কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। উল্টো মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির খোকা, সামসু হাওলাদার, বাদল নামের কিছু লোক আমার ছেলে ও মায়ের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করেছে। বর্তমানেও আমি এ মাদরাসার সভাপতি। বুধবার সকালে মাদরাসায় গিয়ে একজন শিক্ষক অনুপস্থিত দেখে সুপারকে হাজিরা খাতা নিয়ে আসতে বলি। ওই শিক্ষককে অনুপস্থিত দেখাতে বলি হাজিরা খাতায়। এসময় মাদরাসার কয়েক জন লোক এসে আমি কেন মাদরাসায় এসেছি তা জানতে চায়। তারা আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমাকে হুমকি দিতে থাকে। এ খবর জানতে পেরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধারের জন্য মাদরাসায় এলে আমার মা ও আমার ছেলের উপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করা হয়।’