ঢাকার ধামরাইয়ের কালামপুর আমাতন নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাময়িক বরখাস্ত করায় প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী, উপজেলা মাধ্যামিক ও জেলা মাধ্যামিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন এবং হাইকোর্টে এক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের কালামপুর আমাতন নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তর পরিবর্তন করার জন্য বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ আল জামান ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগমকে বিভিন্ন সময়ে চাপ প্রয়োগ করে হাতিয়ে নেন।
এর মধ্যে ৪ লাখ টাকা স্তর পরিবর্তনের বিভিন্ন দপ্তরে খরচ হিসেবে দিতে হবে বিদ্যালয়ের রেজুলেশনে উল্লেখ করেন। কিন্তু তার সময়ে বিদ্যালয়ের স্তর পরিবর্তন হয়নি। পরে বিদ্যালয়ে নতুন কমিটি গঠিত হলে কমিটির সভাপতি খালেদ মাসুদ খান লাল্টু একটি সভা ডেকে সাবেক সভাপতির নেয়া টাকা ফেরত চান। পরে সোনালী ব্যাংক কালামপুর শাখার মাধ্যমে ২০১৮ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর ৩ লাখ, ৪ঠা অক্টোবর ১ লাখ ৮ অক্টোবর ১ লাখ ৭৩ হাজার ও চলতি বছরের ২০ মার্চ ২ লাখ টাকা প্রদান করেন।
এতে মোট ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেন বিদ্যালয় ফান্ডে। তবে ৪ লাল টাকা তিনি দেননি। এসব টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে সভাপতি সানোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খালেদ মাসুদ খান লাল্টু বার বার প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগমকে চাপ প্রয়োগ ও চাকরিচ্যুত করার হুকুম দেন এবং তার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে জবাব চান।
পরে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির তৈরি করা প্রতিবেদনের জবাব না দিয়ে সিনিয়র জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ই নভেম্বর তাকে কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই অনিয়মের মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সাবেক সভাপতি বিদ্যালয়ের স্তর পরিবর্তনের জন্য টাকা নিয়ে ৪ লাখ টাকা ফেরত দেননি।
বর্তমান কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য প্রভাষক আওলাদ হোসেন স্তর পরিবর্তন করার কথাও বলে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনিও স্তর পরিবর্তন করতে পারেননি।
প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম জানান, সাময়িক বরখাস্ত করার আগে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ও এজেন্ডা ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং জোর করে প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও রুমের চাবি ছিনিয়ে নেয় এবং বিদ্যালয়ের সায়েদা আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন।
বাধ্য হয়ে আমি হাইকোর্টে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দায়ের করি। তিনি আরও জানান, স্তর পরিবর্তনের জন্য ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যোৎসাহী সদস্য আওলাদ হোসেন আমার কাছ থেকে জোর করে লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তিনিও বিদ্যালয়ের স্তর পরিবর্তন করতে পারেননি।
পরে আমি টাকা ফেরত চাই। টাকা ফেরত দেয়ার পর থেকে তিনি আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খালেদ মাসুদ খান লাল্টু প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা স্বীকার করেছেন।