আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিতের বদলে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তাব দিয়েছেন উপাচার্যরা।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে এ ব্যাপারে একমত হন তারা। তবে আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) উপাচার্যদের সঙ্গে এক সভায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তবে, গতকালের বৈঠকে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন না। ফলে সমন্বিত বা কেন্দ্রীয় যে কোনো পরীক্ষাই হোক না কেন এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে উপাচার্য পরিষদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির আলোকে প্রণীত পৃথক প্রশ্নপত্রে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তিনটি শাখার বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত কলেজগুলোর স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তির জন্যও এ প্রক্রিয়া প্রযোজ্য হবে।
এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের স্বল্প সময়ের মধ্যে অনলাইনে দরখাস্ত আহবান করা হবে। নভেম্বর মাসের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। কেন্দ্রীয় মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীবৃন্দ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার আলোকে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। সভায় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত লিখিত উত্তর বিশিষ্ট পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রস্তাব করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান আজ রাতে জানান, ‘উপাচার্য পরিষদের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন না। তাই এসব বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে কি না তা এখনও নিশ্চিত না। তাই এটাকে সমন্বিত কিংবা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বলা যাবে না। এটি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা।’
আরও পড়ুন:
যে কারণে ডাকসু ও ঢাবি প্রশাসন সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে
শিক্ষার্থীবান্ধব সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা, তবে...
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে ঢাবির মিশ্র প্রতিক্রিয়া
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে দুই দিন, আবেদন ১০টিতে
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে ঢাবি শিক্ষকের যত যুক্তি
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা : বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় প্রাপ্তিতে মেধাই ভিত্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: সমন্বিত পরীক্ষার বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষক
বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা আগামী বছর থেকে
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিতে চার বিশ্ববিদ্যালয়কে পরামর্শ দিল ইউজিসি
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নতি স্বীকার নয়
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমবে : শিক্ষামন্ত্রী
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘জাবিতে তিনটি শাখায় (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকি। ঠিক তেমনি কেন্দ্রীয়ভাবে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এটার তদারকি করবে ইউজিসি। এ প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে। তবে যারা ইচ্ছুক না তারা করবে না।’
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমানসহ ২৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ উপস্থিত ছিলেন।