সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সমস্যা কোথায়? - দৈনিকশিক্ষা

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সমস্যা কোথায়?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

উচ্চশিক্ষার সুযোগ সীমিত হওয়ায় মেডিক্যাল/প্রকৌশল/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লক্ষাধিক আসনের বিপরীতে প্রতি বছর একজন শিক্ষার্থী কমপক্ষে দশটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনও করে থাকে। দেশের সব মহলে এখন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—এমন কোনো ভর্তি প্রক্রিয়া কি অনুসন্ধান করে বের করা যায় না, যাতে করে সমন্বিতভাবে অনুষদভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম সমপন্ন করা যায়? পৃথিবীর উন্নত দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য সরকারের আলাদা কর্তৃপক্ষ রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে আমাদের দেশেও এ ধরনের একটি পদ্ধতি গড়ে তোলা সম্ভব। শনিবার (১৭ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন এস এম সাইদুর রহমান উলু।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবারও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না। সরকারের প্রস্তুতি না থাকায় ও সমন্বয়হীনতার কারণে আগের মতোই ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। সমন্বিত বা গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে আলোচনা শুরু হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো করে পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট স্বতন্ত্র মান বজায় রাখতে চায়। একই মত দিয়েছে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও। এর আগে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উদ্যোগে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মধ্যে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে আঞ্চলিক অগ্রাধিকারের দাবিতে সিলেটের স্থানীয়দের আন্দোলনের পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিলে সে উদ্যোগ আর আলোর মুখ দেখেনি।

এবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২৮টি নতুন বিভাগ খোলা হয়েছে, যেগুলোতে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভিন্ন ভিন্ন দিন নির্ধারিত থাকে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে পরীক্ষায় অংশ নিতে। এ ক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুকে পোহাতে হবে নানা দুর্ভোগ। এমনকি একই জেলায় পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে একাধিকবার যেতে হবে শিক্ষার্থীদের। তবে লাভবান হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

একজন শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করায় ফরম বিক্রি বাবদই অনেক টাকা উপার্জন করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আবেদন ফরম, খাতা ও পরিদর্শন ফি বাবদ যত টাকা খরচ হয়, তার কয়েক গুণ বেশি টাকা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার আয়ের ৪০ শতাংশ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা রেখে তা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করার কথা। তবে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হলে ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ কমে আসত। কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে নেয়া পরীক্ষার মাধ্যমেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারত শিক্ষার্থীরা। আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম থাকায় পৃথক পরীক্ষা হলেও তেমন একটা সমস্যা হতো না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। ইউজিসির একাধিক বার্ষিক প্রতিবেদনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিকে ত্রুটিপূর্ণ, ব্যয়বহুল ও কোচিংনির্ভর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলো যদি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে ফলাফলের ভিত্তিতে কে কোন মেডিক্যালে পড়বেন, তা ঠিক করে দিতে পারে, তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন তা পারে না?

লেখক : পাবনা।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039808750152588