সময়ের প্রয়োজনে ডাকসু নির্বাচন - দৈনিকশিক্ষা

সময়ের প্রয়োজনে ডাকসু নির্বাচন

জসীম উদ্দীন |

দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এটাকে দেশের মিনি পার্লামেন্ট বা দ্বিতীয় সংসদও বলা হয়ে থাকে। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের পর বিভিন্ন সময় তফসিল ঘোষিত হলেও নির্বাচন হয়নি একবারও। ডাকসুর অতীত ইতিহাসে চোখ রাখলে দেখা যাবে, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ডাকসু জাতির বিপদের সময় কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেছে।

১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ছয় দফা, ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, সর্বশেষ ১৯৭১ সালে আমাদের চূড়ান্ত বিজয়েও ডাকসুর ভূমিকা অবিস্মরণীয়। কিন্তু সেই ডাকসু নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছিল দীর্ঘ ২৮ বছর।

জাতির দুর্যোগময় মুহূর্তে ডাকসু যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রশ্ন হল, এ মুহূর্তে ডাকসু নির্বাচন কতটুকু গুরুত্ব রাখে?

একটি দেশ সামনে এগিয়ে চলার জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব। গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ পায়নি বঙ্গবন্ধুর মতো কোনো অবিসংবাদিত নেতা। আসেনি কোনো ভাসানী, সোহরাওয়ার্দী। যোগ্য নেতা থাকবেই বা কেন? যোগ্য নেতা তৈরির আঁতুড়ঘরে তো তালা দিয়ে রাখা হয়েছিল।

যে ডাকসু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চর্চাকেন্দ্র ছিল, সে ডাকসু বলতে এখন বোঝায় এক টাকার চা, তিন টাকার সিঙ্গারা, সামুচা ইত্যাদি। এটা এখন কেবল একটা ক্যাফেটেরিয়ার নাম।

রাজনীতি যাদের অপেক্ষায় থাকে, সেই তরুণরা আজ রাজনীতিবিমুখ। আর দলীয় যে রাজনীতি চলছে, তা মূলত অতিরাজনীতিকরণ ছাড়া আর কিছু নয়। এতে নেতার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলেও যোগ্য নেতা তৈরি হচ্ছে না বললেই চলে।

একদল শিক্ষক দলীয় রাজনীতিকেই মুখ্য দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছেন। ছাত্র-শিক্ষকের মধুর সম্পর্কের মাঝখানে দলীয় রাজনীতি আজ কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডাকসুই পারে এ কাঁটা উপড়ে ফেলে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে সম্পর্কের সেতুবন্ধ রচনা করতে। ডাকসু ছিল না বলে শুধু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়; একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও পিছিয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিনেটের ১০৪ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধি থাকার কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেখানে ছাত্রদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরার কেউ নেই। ৩য় বর্ষে উঠেও আবাসিক হলে সিটের ব্যবস্থা হয় না অনেক ছাত্রছাত্রীর। হল ক্যান্টিনগুলোর খাবারের মান নিয়ে কথা বলতেও এখন ঘৃণা হয়।

ডাকসু নির্বাচন হবে; নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা নির্বাচিত হবে সাধারণ ছাত্রদের ভোটে। থাকবে জবাবদিহিতা। বন্ধ হবে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি। সিনেটে শিক্ষার্থীদের সব দুর্দশার কথা ধ্বনিত হবে ডাকসু নেতৃবৃন্দের কণ্ঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে আসবে আমূল পরিবর্তন। সাংস্কৃতিক অঙ্গন আবার মুখরিত হয়ে উঠবে। সর্বোপরি দেশ পাবে কিছু যোগ্য নেতা; যাদের হাত ধরেই গড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সৌজন্যে: দৈনিক যুগান্তর

 

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075008869171143