প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে জাতির ভিত্তি স্তর। ১৯৯৩ সাল থেকে দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণ, শিক্ষা উপবৃত্তি, অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও খাদ্য ব্যবস্থাসহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বুধবার (১০ জুলাই) দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধনটি লিখেছেন নুরুন নাহার বকুল।
দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকারের এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে শিক্ষকদেরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে; যেমন- পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের আরও দায়িত্বশীল ও ন্যায়নিষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি উন্নত মানসিকতার পরিচয় দিতে হবে। বস্তুত প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে সরকার ও শিক্ষক উভয়কেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে।
সরকার ইতিমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল একধাপ উন্নীত করেছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৮ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এর বাইরে নতুন করে জাতীয়করণকৃত ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এ সুবিধার আওতায় আসবেন। এ কথা কে না জানে, শিক্ষকরা হচ্ছেন জ্ঞান ও বিদ্যাদাতা। ঘরে ঘরে জ্ঞান-প্রদীপ প্রজ্বলনে তাদের রয়েছে বিশাল ভূমিকা। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের বৈষম্যের বৃত্তে বন্দি রেখে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করে তোলা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল।
এ বিষয়টি উপলব্ধি করে সরকার শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর অন্তরে জ্ঞান-প্রদীপ প্রজ্বলনে যেসব শিক্ষক ছিলেন নিরলস, নিবেদিতপ্রাণ ও আন্তরিক এবং বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন; তাদের মধ্যে ২০১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে জুন ২০১৯ পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ৬৪ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এএইচএম গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, মতলব উত্তর-দক্ষিণ তথা বৃহত্তর মতলবের মাটি ও মানুষের প্রাণের নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল। দেশসেরা শিক্ষিকা নুরুন নাহার বকুল ও অপর শিক্ষক হাসান মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয় এবং পৌর মেয়র উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের সদস্যা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য সবার বক্তব্যের পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত ৬৪ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, চারবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত ও প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে বর্তমান সরকার শিক্ষকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ।
শিক্ষক, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর