সরকারি কলেজগুলোর সংকট-সমাধান কতদূর? - দৈনিকশিক্ষা

সরকারি কলেজগুলোর সংকট-সমাধান কতদূর?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি কলেজের সংখ্যা ৬৩২টি। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরও সাতটি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজ থেকে প্রতিবছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে বের হচ্ছেন। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।  

নিবন্ধে আরও জানা যায়,  দুর্ভাগ্যজনকভাবে, শিক্ষকের তীব্র সংকট, দুর্বল অবকাঠামো, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া ও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্নসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত সরকারি কলেজগুলো।

ইউজিসিসহ বিভিন্ন মহল সরকারি কলেজ নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলে; কিন্তু কেন সরকারি কলেজগুলোর বেহাল দশা এবং এ থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে কোনো পক্ষই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন না। এর বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত সাত কলেজের সৃষ্ট সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান আজও না হওয়া।

সবাই সরকারি কলেজগুলোর শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সহজেই; কিন্তু কেন এ অবস্থা সেই সত্যটা কেউ উদঘাটন করতে চান না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষাগুলোয় তদারকির যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে; তবুও ৬৩২টি কলেজ নিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে চলছে, তার জন্য বাজেট বরাদ্দটাও সেই অনুপাতেই থাকা উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রয়োজনের তুলনায় বাজেট খুবই অপ্রতুল।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এত কম বাজেট নিয়ে এতগুলো কলেজ কীভাবে চলবে; সেই কথাটি কেউ ভাবেন না। দেশের প্রায় প্রতিটি কলেজেই ভবনসহ অবকাঠামোগত নানা সংকট রয়েছে। সম্প্রতি অনুসন্ধানে সরকারি কলেজগুলোয় শিক্ষক সংকটের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। 

সারা দেশের ৬৩২টি কলেজের মধ্যে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জাতীয়করণকৃত ৪৬টিসহ ৩২৯টি পুরনো কলেজ আছে। বাকি ৩০৩টি ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টের পর জাতীয়করণকৃত কলেজ।

পুরনো কলেজগুলোতে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার শিক্ষকের পদ আছে। এই পদগুলো থেকে সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব থমকে আছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। অর্থাৎ শিক্ষকের এ বিরাট অভাবের বোঝা বহন করেই চলছে দেশের সরকারি কলেজগুলো।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) তথ্য অনুযায়ী, উল্লিখিত পদের মধ্যে ২ হাজার ৫৯৭টিই শূন্য, যা বিদ্যমান পদের প্রায় ১৭ শতাংশ। এগুলোর মধ্যে অধ্যাপক ১৩৩, সহযোগী অধ্যাপক ২৮২, সহকারী অধ্যাপক ৩২২ এবং প্রভাষকের ১ হাজার ৮৬০টি পদ খালি। নতুন জাতীয়করণকৃত কলেজের অবস্থা আরও করুণ। অবসরে যাওয়ার কারণে শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কলেজে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।

উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি এবং অনার্স পর্যায়ে পাঠদানকারী এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনের তুলনায় ৫০ শতাংশ শিক্ষক থাকা নিঃসন্দেহে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জন্যই অশনিসংকেত। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি, গণিত ও আইসিটির মতো মৌলিক বিষয়ের শিক্ষকও নেই!

শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে যেতে চান না। কখনও বা ক্লাসে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করে ফিরে আসতে হয়। আর যেখানে শিক্ষক আছে, সেখানে উপযুক্ত তদারকি দৃশ্যমান না থাকায় শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যতটা না ঘনিষ্ঠতা; তারচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠতা দেখা যায় প্রাইভেট কিংবা কোচিংয়ের সঙ্গে।

কোনো কোনো কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে ঘাটতি পূরণের সংবাদ সরকারি কলেজগুলোর জন্য লজ্জারও বটে। শিক্ষক আর অবকাঠামোর তীব্র সংকটে শিক্ষার মান নিম্নমুখী হওয়াটাই তো স্বাভাবিকই। সরকারি কলেজে শিক্ষার মান নিয়ে দেশের রথী-মহারথীদের প্রশ্ন তোলার আগে কলেজগুলোকে সংকটের এই দুর্বিপাক থেকে কীভাবে বের করা যায়, সরকারকে সেই তাগাদা দেয়াটাই বেশি জরুরি নয় কি?

লেখক : তৌহিদ বিল্লাহ, নরসিংদী সরকারি কলেজ।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065538883209229