বগুড়া শাজাহানপুরের আড়িয়া রহিমাাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বাঁশের হাট পরিচালনা করছে একটি মহল।
এতে বিদ্যালয়ের কমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ইজারাদারের বিরুদ্ধে স্কুলের জায়গায় দোকান ঘরের ছাউনি নির্মাণ করে পজিশন বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এতে বাধা দেয়ায় ইজারাদারের লোকজন হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের লেখাপড়া ও খেলাধুলার পরিবেশ রক্ষা এবং কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রায় ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে মাঠের চারপাশে প্রাচীর ও গেইট নির্মাণ করা হয়েছে। এই মাঠে উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু বাঁশের হাট বসানোর কারণে পরিবেশ অনুকূল না হওয়ায় এখন তা অন্যত্র চলে গেছে। এমনকি শিক্ষার্থীরাও খেলাধুলা করতে পারছে না। বাঁশের গাড়ি যাতায়াত করায় গেইট ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, স্কুলের জায়গায় সীমানা প্রাচীর ঘেষে দোকান ঘরের ছাউনি নির্মাণ করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় পজিশন বিক্রি করছে ইজারাদারের লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুল গেইটে তালা লাগিয়ে বাধা দেয়ায় এবং স্কুলের জায়গায় দোকান ঘরের ছাউনি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় হুমকি দিয়েছে ইজারাদারের লোকজন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া পারভীন বলেন, হাটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে হাঁটু পর্যন্ত কাদাপানি হয়। গেইট দিয়ে ঢুকতে না পেরে প্রাচীর টপকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে হয়। ছেলে-মেয়েরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারে না। একবার বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল খেলতে গিয়ে মাঠে পড়ে থাকা বাঁশের আঘাতে এক শিক্ষার্থীর পা কেটে গুরুতর আহত হয়েছিল। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
আড়িয়া হাট-বাজার ইজারাদারের প্রতিনিধি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে স্কুল মাঠে বাঁশের হাট বসে। এখনো এই ধারা অব্যাহত আছে। এই হাটকে কেন্দ্র করেই লাখ লাখ টাকায় হাট ইজারা নেয়া হয়েছে।' বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে হুমকির বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দোকানদাররা নিজেরাই ছাউনি নির্মাণ করছে। এখানে টাকার বিনিময়ে কোনো পজিশন বিক্রি করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফুয়ারা খাতুন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে উচ্ছেদ নোটিশের ফাইল প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করা হলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উচ্ছেদ করা হবে।