বিসিএস ননক্যাডার থেকে সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে ৩৭ তম বিসিএস উত্তীর্ণরা। তাদের মতে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ননক্যাডার থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা হলে শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতাপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সেবা পাবে। এর ফলে শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে।
শূন্যপদগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রার্থী পাওয়া না গেলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থীদেরকে ৩৭তম বিসিএস থেকে নিয়োগ এবং বাকি শূন্যপদগুলোতে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের দাবি জানিয়ে ৩৭ তম বিসিএস উত্তীর্ণ হারুন অর রশিদ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, ৩৭তম বিসিএসে ৩ হাজার ৪৫৪ জন পরীক্ষার্থী বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারী, লিখিত এবং ভাইভাসহ মোট ১৫০০ নম্বরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পদ স্বল্পতার কারণে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে তারা সুপারিশপ্রাপ্ত হতে পারেননি। তাই বর্তমানে ননক্যাডারে সরকারি ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগের অপেক্ষায় বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবিক কষ্টে জীবন ধারণ করছি।
৩৭তম বিসিএস উত্তীর্ণ মো. আতিকুল ইসলাম জানান, ৩৭তম বিসিএস উত্তীর্ণদের থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ননক্যাডার থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা হলে শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতাপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সেবা পাবে। এর ফলে শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে। নিয়োগে কোনক্রমেই দেরি হবে না, কেননা প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শেষ। তাই যে কোন মুহূর্তে নিয়োগ দেয়া সম্ভব। ননক্যাডার থেকে শিক্ষক নিয়োগ না হলে নতুন করে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে অধিক সময়ক্ষেপণ হবে। আবেদন, বাছাই পরীক্ষা, ভাইভা ইত্যাদি কাজে সরকারের অধিক সময় এবং অর্থ ব্যয় হবে। ৩৭তম বিসিএস উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেয়া হলে বাকি শূন্যপদগুলোও পূরণ করা যাবে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে।
গত ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শূন্যপদের সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৮৪ টি। যার মধ্যে ১ম ও ২য় শ্রেণির শূন্যপদের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৮৭৬ টি। সর্বাধিক শূন্যপদ রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন অংশগ্রহণ করেন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ক্যাডার পদে সুপারিশকৃত হয় ১ হাজার ৩১৪ জন। অপরদিকে ৩ হাজার ৪৫৪ জন পদ স্বল্পতার কারণে ননক্যাডারের তালিকায় স্থান পায়নি। এই ৩ হাজার ৪৫৪ জন বিভিন্ন নন ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়ার আশায় অপেক্ষমান।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আদেশে যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের নিয়ে বিসিএস ননক্যাডারদের নিয়োগদানের নিমিত্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে রিকুইজিশন (অধিযাচন) চেয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে, বিভাগে, দপ্তরে চিঠি দেয় সরকারি কর্মকমিশন। কিন্তু অজানা কারণে যথেষ্ট পদের রিকুইজিশন পিএসসিতে যায়নি।
গত ২৮ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে রিকুইজিশন পাঠানোর অনুরোধ জানান ৩৭তম বিসিএস উত্তীর্ণরা। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ননক্যাডার থেকে নিয়োগের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন, ননক্যাডার থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক পাওয়া যায় না এবং নিয়োগে দেরি হয়। কিন্তু পূর্ববর্তী ৩৫ এবং ৩৬ তম বিসিএসে ননক্যাডারদের সহকারী শিক্ষক পদে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরীক্ষার্থীর চাকরি নিশ্চিত হয়েছে।
বিগত বছরগুলোর বিসিএস থেকে ননক্যাডার পদের চাকরিতে সুপারিশ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ ছাড়া অনেক বিসিএস উত্তীর্ণ প্রার্থীকেই বেকার থাকতে হতো। তাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদগুলোতে ৩৭তম বিসিএস ননক্যাডার প্রার্থীদের নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ৩৭তম বিসিএস উত্তীর্ণরা।