সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫ হাজাররের বেশি সহকারী শিক্ষকের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি নিয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করায় এ জটিলতা সৃষ্টি। যদিও গত এক বছরের বেশি সময়ে সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া অনেকটাই গুছিয়ে এনেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতি। নতুন নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ শতাংশ সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়া হবে বলে গতবছর জানায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সেপ্টেম্বরে সর্বপ্রথম দৈনিক শিক্ষাডটকমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সরকারি স্কুল শিক্ষকরা হয়েছিলেন আনন্দিত। এদিকে সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া অনেকটাই গুছিয়ে এনেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: পদোন্নতি পাচ্ছেন মাধ্যমিকের ৫০ শতাংশ শিক্ষক
গত ২৭ অক্টোরব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির খসড়া গ্রেডেশন তালিকা প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ তালিকায় ৫ হাজার ৮৫৪ শিক্ষকের নাম ছিল। তালিকার অসঙ্গতি বা আপত্তি থাকলে গত ১৪ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন পাঠাতেও বলা হয়েছিল শিক্ষকদের।
আরও পড়ুন : সরকারি হাইস্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির খসড়া তালিকা প্রকাশ
এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি বিষয়ে ২০০৬-০৬ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন শিক্ষক পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া আটকে গেছে।
এদিকে শিক্ষা অধিদপ্তরের অপর একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০০৫-০৬ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পাওয়া কৃষি শিক্ষকরা বিশেষ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাই তারা সে সময় ১৪তম গ্রেডে বেতন পেতেন। আর সরকারি স্কুল শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে বেতন পেতেন। এসব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষি শিক্ষকরা প্রথম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করেন। অধিদপ্তর থেকে তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে দেয়া হলেও আশানরুপ উত্তর পাননি তারা। পরে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দারস্থ হলেও আশানরুপ উত্তর কোথাও পাননি। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে তারা আদালতের সরনাপন্ন হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া গতবছর সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। গত একবছরে কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে এসেছিল শিক্ষা অধিদপ্তর। গ্রেডেশন তালিকায় প্রকাশ করা হয়ে গেছে। তালিকার অসঙ্গতি নিয়ে আবেদনও চাওয়া হয়েছিল শিক্ষকদের কাছে। কিন্তু পদোন্নতি নিয়ে কয়েকজন কৃষি শিক্ষক মামলা করায় পুরো প্রক্রিয়াটি আটকে গেছে।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, আদালতে কোন বিষয়ে মামলা দায়ে হলে সে বিষয়ের নির্বাহী কর্তৃপক্ষের আর কিছুই করার থাকেনা। বিচার বিভাগ থেকে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই করার নেই। মামলাটি নিষ্পত্তি হলে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু হবে।