সারাদেশের সরকারি হাইস্কুলে মোট ১৫০৬টি পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ফ্রিজে পড়ে আছে প্রায় ৫ মাস ধরে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর অদ্যাবধি কোনো অগ্রগতি নেই।
পদগুলো: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি), ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ও সহকারী গ্রন্থাগারিক। সংশ্লিষ্টরা জানান, বেসরকারি হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে এসব পদ থাকলেও সরকারি হাইস্কুলে তিনটি পদ সৃষ্টি করা হয়নি।
জানতে চাইলে মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি হাইস্কুলে এ বিষয়ে কোনো পদ নেই। এজন্য আইসিটি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক, ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ সৃষ্টি করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তাব ৫ মাস আগে পাঠিয়েছি। সরকারি হাইস্কুলে এসব পদ না থাকলেও বেসরকারি হাইস্কুলে রয়েছে বলে তিনি জানান।
সূত্র জানায়, সারা দেশে ৩৩৭টি পুরাতন সরকারি হাইস্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৪টিতে ডাবল শিফট চালু রয়েছে। প্রতিটি সরকারি হাইস্কুলে আইসিটি ল্যাব আছে। একাধিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম আছে। স্কুলে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। আইসিটি শিক্ষক না থাকায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে ডাবল শিফট স্কুলে দুটি এবং এক শিফটের স্কুলে একটি করে মোট ৫০২টি আইসিটি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো অনুযায়ী ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা বেসরকারি হাইস্কুলের বিজ্ঞানাগার ও আইসিটি ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। কিন্তু সরকারি হাইস্কুলে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্টের কোনো পদ নেই। ফলে ল্যাবগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই কষ্টকর। ল্যাবের সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। আর শিক্ষার্থীরাও হাতে কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একইভাবে সরকারি হাইস্কুলের পাঠাগার রক্ষণাবেক্ষণে কোনো সহকারী গ্রন্থাগারিক নেই। যে কারণে ডাবল শিফটের স্কুলে দুটি করে এবং এক শিফটের স্কুলে একটি করে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মাউশির পদ সৃষ্টির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয় প্রবর্তন করা হয়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো অনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদ সৃজন করা হয়। তারা বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ে পাঠদান করেন। কিন্তু সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ে কোনো পদ না থাকায় বর্তমানে বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করেন।