সাবেক শিক্ষাসচিব ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হলে শিক্ষকদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে। তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে, তখন শিক্ষকদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ আসবে।
তখন সরকার বা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শিক্ষকদের পেছনে ছুটে বেড়াতে হবে না। শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে টকশোতে অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ‘কোচিং: ন্যায্য না বাণিজ্য’ শিরোনামের টকশোতে স্কুল শিক্ষকদের বিষয়ে দুদকের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সাবেক শিক্ষাসচিব ও দৈনিকশিক্ষার প্রধান উপদেষ্টা এন আই খান আরও বলেন, শিক্ষকদের পেছনে দুদকের ছুটে বেড়ানো; বউকে রেখে ভাবিকে শাড়ি কিনে দেয়ার মতো, এর ফলে প্রশাসন দূর্বল হয়। অনিয়ম রোধে আমাদের শিক্ষা প্রশাসনকে শক্তিশালী করতে হবে। উচ্চ পদস্থদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুদকের চেয়ারম্যান কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়ে করুণদশা দেখতে পান। এছাড়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিংবাণিজ্য সম্পর্কে হাইকোর্টের দেয়া এক রায়ে দুদক কোচিং–বাণিজ্যের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারে কি না, এই প্রসঙ্গও রায়ে আসে। আদালত বলেন, দুদক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে দুদক তদন্ত করতে পারে। তবে বেসরকারি শিক্ষকের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারে না। দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে দুদকের অগ্রাধিকার তালিকা থাকা উচিত, যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য দুদকের জনবলের সংকট রয়েছে। কাস্টম হাউস, ভূমি অফিস ও আদালত প্রাঙ্গণ যেখানে দুর্নীতির সম্পৃক্ততার ইস্যু রয়েছে, সেখানে এ ধরনের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়ে দুদকের সম্পৃক্ততা সমীচীন নয়। দুর্নীতির ইস্যু বলতে যা বোঝানো হয়, তাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক যথাসময়ে স্কুলে গেলেন কি গেলেন না, তা অনুসন্ধান ও তদন্তের তালিকার তলানিতে থাকা উচিত।
উল্রেখ্য, এর আগে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর শিক্ষাসচিব হিসেবে শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করতে গেলে তার ইচ্ছা বা চাওয়ার কথা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে প্রধানমন্ত্রীকে এন আই খান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সব প্রাথমিক বিদ্যালয় যেমন একযোগে সরকারিকরণ করেছেন ঠিক তেমনি সব মাধ্যমিক ও কলেজগুলো একযোগ সরকারিকরণ করলে শিক্ষার অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হয়। এটাই আমার চাওয়া।’ এরপর প্রধানমন্ত্রী এন আই খানের কাছে জানতে চান সরকারিকরণের ব্যয় সম্পর্কে। ৩০ নভেম্বর বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে দৈনিক শিক্ষাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এন আই খান এসব কথা বলেন। দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারটি সারাদেশে শিক্ষকদের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
আরও দেখুন: ইন-হাউজ কোচিং থাকা উচিত: এহছানুল হক মিলন