সরকারিকৃত কলেজসমূহের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রাণের আকুতি - দৈনিকশিক্ষা

সরকারিকৃত কলেজসমূহের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের প্রাণের আকুতি

গাজী মো: ইসমাইল |

মানবতার মহয়সী নেত্রী, জাতির জনকের সুগোয্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতাপূর্ণ ও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকারি স্কুল-কলেজবিহীন উপজেলা সদরে একটি করে বেসরকারি  স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণের জন্য নির্বাচিত করে আদেশ জারি করা হয়। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের জারি করা আদেশ দেখে কলেজসমূহের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির  কর্মচারীবৃন্দ আনন্দে হয়ে আত্মহারা হয়ে পড়েন। আমার জানা মতে তাদের অনেকেই তাহাজ্জুত নামাজ আদায় তথা মিলাদের মাধ্যমে গরীবদের সম্বল চোখের পানি ফেলে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া ছাড়া আর কিইবা দিতে পারতাম।

হে মমতাময়ী মা, আপনি বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বৈশাখী ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি, বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি করেছেন। আপনি এমনই একজন নেত্রী তথা মাতা যিনি আমাদের মত নিম্ন শ্রেণির কর্মচারীদের সম্মান বৃদ্ধির জন্য পিওন, দপ্তরী, এমএলএসএস প্রভৃতি ঔপনিবেশিক আমলের পদবি-উপাধি বাতিলপূর্বক শোভন ও মর্যাদাপূর্ণ ‘অফিস সহায়ক’ উপাধিতে ভূষিত করে আমাদের মনে প্রশান্তি এনে দিয়েছেন। সমাজে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারি। আমরা আপনার এই অভূতপূর্ব মহানুভবতায় চিরকৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অন্তরের অন্ত:স্থলে মায়ের আসনটি দখল করা জননী কাছে আমাদের আকুল আবেদন এই, “সরকারিকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষক কর্মচারীদের সরকারিকরণ প্রত্রিয়া যেন আর বিলম্বিত না হয় বরং অতি শীঘ্রই তা সম্পন্ন হয়।”   

এক শ্রেণির প্রতিহিংসাপরায়ণ ও অহংকারী ব্যক্তিবর্গের দ্বারা কাগজপত্রাদি একাধিকবার যাচাই বাছাই এর নামে অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি ও কালক্ষেপন একাদিকে যেমন আপনার ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বিলম্বিত করা হচ্ছে।  তেমনি নানা অজুহাতে আপনারই দেয়া ওয়াদা পূরণের বিষয়কে বিলম্বিত করে নেপথ্যে তাদের নিজের মনের হীন উদ্দেশ্য চারিতার্থ করার মাধ্যমে আপনার লক্ষ লক্ষ অসহায় সন্তানদের ন্যায্য পাওয়া থেকে নির্দয় নির্মমভাবে বঞ্চিত করার অপচেষ্টায় তারা সদা লিপ্ত রয়েছে।

ফলশ্রুতিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোর অসংখ্য শিক্ষার্থীবৃন্দ ও তাদের অভিভাবকবৃন্দও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মা জননী, আমার ৩৫ বছরের চাকুরির জীবনে দেখেছি আপনি জাতিকে মানসম্মতভাবে শিক্ষিত করতে উপহার দিয়েছেন একটি যুগপোযোগী শিক্ষানীতি। 

আপনি দেশের সকল রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক  বিদ্যালয়গুলোকে একযোগে জাতীয়করণ করেছেন। আপনি প্রতি উপজেলায় একটি স্কুল ও একটি কলেজ সরকারি করেছেন। এতে করে দেশ উন্নত হবে এবং সমগ্র পৃথিবীতে শিক্ষত জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়াবেই ইনশাআল্লাহ। শিক্ষা ক্যাডারের কতিপয় ঘাপটি মারা কর্মকর্তা আপনার ঘোষিত প্রজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করে ছয় মাসের কাজকে প্রায় দুই বছরেও শেষ করেনি। যাতে করে আপনি বিভ্রান্তিতে পরেন।

সন্তান হিসেবে বিনীতভাবে নিবেদন করছি যাতে আত্তীকরণ কাজটি দ্রুত শেষ হয়। মা, অনেক গরীব অভিভাবক এসে আমাদের কাছে প্রশ্ন করেন, সরকার কলেজকে সরকারি করেছে কিন্তু আমরা কিছুই তো পেলাম না? এর কোন সঠিক উত্তর আমরা দিতে পারি না।

আর একটি সমস্যা যা আপনার কাছে না বললেই নয়। সরকারিকরণ আদেশ জারীর পরে অনেক কর্মচারী মৃতুবরণ করেছেন, কেউ কেউ অবসরে গেছেন। মৃতদের সন্তনরা আজও জানতে পারেনি, তার বাবা-মা সরকারির সুবিধা পাবেন কি না?

অবসরে গেছেন যারা তাদের অবসরের সুবিধাদি দেবার জন্য কি করবেন? অসহায় মানুষের দিকে চেয়ে আপনি যেমন নিজে ক্ষমতাবলে সন্তানদের কোলে তুলে নিয়েছেন সেই আপনিই পারেন বিষয়টির দ্রুত সমাধান দিতে। তাই এ ব্যাপারে আপনার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর থেকে নলছিটি ডিগ্রি কলেজে তৎকালীন কর্মচারী হিসেবে যোগদান করে শত কষ্টের মাঝে জীবন যাপন করে আসছি। আগামী ১৫ অক্টোবর ২০২০ আমার শেষ কর্মদিবস। বিধি মোতাবেক চাকুরি জীবনের অবসর ঘটবে। অথচ ছেলে-মেয়েদের কাছে বলতে পারি না আমি সরকারি হলাম না বেসরকারি থেকে গেলাম। আর্থিক সুবিধা সরকারি হিসেবে পাবো নামি বেসরকারি হিসেবে পাবো? আমার মত শত শত কর্মচারীর একই অবস্থা। এ অবস্থা নিরসনের জন্য আপনার হস্তক্ষেপ অতিব জরুরী হয়ে পড়েছে। এ আকুতি দেশের সদ্য ঘোষিত সরকারিকরণ কলেজের কর্মচারীদের। 

লেখক : গাজী মো: ইসমাইল, অফিস সহায়ক, সরকারি নলছিটি ডিগ্রি কলেজ, ঝালকাঠি। 

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045170783996582