উপজেলার মধ্যে সবার চেয়ে বেশি নম্বর পেয়েও প্রাথমিক সমাপনী বৃত্তিতালিকায় নাম নেই ইসরাত জাহানের। ইসরাত নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার পলাশবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ইসরাতকে বৃত্তির আওতায় নিয়ে পুনরায় সংশোধনী ফলাফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন ইসরাতের অভিভাবক। এ নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনও করে ইসরাতের পরিবার।
ধামইরহাট মডেল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসরাতের মা সুলতানা রাজিয়া জানান, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পলাশবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষা দেয় ইসরাত। এতে ছয়টি বিষয়ের মধ্যে দুটিতে ১০০ এর মধ্যে ৯৯ ও বাকি চারটিতে ৯৮ নম্বর করে নম্বর পায় সে। উপজেলার সব পরীক্ষার্থীর মধ্যে ইসরাতের প্রাপ্ত নম্বরই সবচেয়ে বেশি। অথচ ট্যালেন্টপুলে তার নাম নেই।
ইসরাতের মা আরও জানান, ইসরাতের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও ট্যালেন্টপুল তালিকায় নাম এসেছে অনেকের। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ফলাফলে সংশোধনী আনতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তারা গড়িমসি করছেন। এ অবস্থায় ইসরাতের মনোবল ভেঙে পড়েছে এবং সে পড়ালেখায় মনযোগী হতে পারছে না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইসরাতের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিনা ইয়াসমিন বলেন, সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ইসরাত জাহান স্কুল পর্যায়ে, ক্লাস্টার পর্যায়ে এমনকি উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। কিন্তু তারপরও সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তির আওতায় না আসায় সবার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকাশিত বৃত্তির ফলাফলে এখনও সংশোধনী আনা সম্ভব উল্লেখ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ ও সঠিকভাবে খাতা নিরীক্ষার পর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে অধিদপ্তরে নম্বর পাঠানো হয়েছে। ট্যালেন্টপুল বা বৃত্তিতালিকা হয়ে থাকে অধিদপ্তরে। সেখানে কোনো কারণে হয়তো ইসরাতের নাম বাদ পড়েছে। তবে সংশোধনী আনার সুযোগ রয়েছে এখনো।
ফলাফল পুনঃসংশোধন ও ইসরাতকে বৃত্তির আওতায় আনতে তার অভিভাবক গত ২৫ মার্চ একটি লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনটি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ফলাফল সংশোধনপূর্বক ইসরাতকে ট্যালেন্টপুলের তালিকাভুক্ত ও একই সঙ্গে বৃত্তির আওতায় আনা হবে’, বলেন এ শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলামও সংশোধিত বৃত্তিতালিকায় ইসরাতের নাম অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেন। পূর্বের ফলাফলে সংশোধনী আনতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০৪ শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেড ও ৩১ শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়।