সাত পুকুর প্রকল্প বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা কতটুকু? - দৈনিকশিক্ষা

সাত পুকুর প্রকল্প বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা কতটুকু?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পুকুরগুলোর সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাত পুকুর প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মূলত পুকুরে শিক্ষার্থীদের গোসল, সাঁতার কাটা এবং ফিশারিজ বিভাগের গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য এ সুবিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে সিন্ডেকেটের অনুমোদনসাপেক্ষে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় পুকুরগুলো হলো জোহা হল পুকুর, হবিবুর রহমান হল পুকুর, মন্নুজান হলসংলগ্ন পুকুর, সায়েন্স ওয়ার্কশপ পুকুর, মেডিকেল সেন্টারের সামনের পুকুর, শহীদ হবিবুর রহমান হলের পশ্চিমের পুকুর, রোকেয়া হলের উত্তর-পূর্বের কচিয়া পুকুর ও পদ্ম পুকুর। সোমবার (১৭ জুন) বণিকবার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন  মো. মাহবুব আলম প্রদীপ।

এ প্রকল্পের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে কমিটির সভাপতি বলেছেন, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং পুকুরগুলো সংরক্ষণ করতেই মূলত এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে (সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৭ মে, ২০১৯)। রাবির একজন শিক্ষক হিসেবে এ উন্নয়নকাজের সমর্থন করা এবং গর্ব বোধ করা বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি। তবে এর আগে আমি প্রকল্পটির যৌক্তিকতা বিচারে কিছু মতামত তুলে ধরার ইচ্ছা পোষণ করছি। এ প্রকল্পের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনের কথা বলা হয়েছে। গত নয় বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মান নিশ্চিতকরণই যেখানে সম্ভব হয়নি, সেখানে পুকুর সংস্কার কিংবা সংরক্ষণের নামে এত টাকা ব্যয়ের যৌক্তিকতা ও বাস্তবতা কতটুকু? পুকুর সংস্কার ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আরো সমস্যা রয়েছে, তা খুব সংক্ষেপে তুলে ধরছি। এরপর আমি পুকুর সংস্কারের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলব।

রাবির অন্যতম প্রধান সংকট হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর আবাসনের অপ্রতুলতা। গবেষণার সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সরাসরি জড়িত থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষকদের শহরের নানা প্রান্তে নানা সমস্যা মোকাবেলা করে ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। বাসার মালিকদের নিপীড়ন সহ্য করে নিজেদের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। আবাসন সংকটের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকতে হয়। বিশেষ করে মেয়েদের সমস্যাটা একটু বেশিই হয়ে থাকে। হলের বাইরে থাকায় আর্থিক সমস্যা লেগেই থাকে। এক্ষেত্রে আর্থিক সংকট ও মানহীন পরিবেশ লেখাপড়ার অন্তরায়। একইভাবে কর্মকর্তারাও দ্রুত বাসায় ফেরার তাগিদে কাজ ফেলেই চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আরেকটি সমস্যা হচ্ছে শিক্ষকদের অফিসের অভাব। এমন অনেক বিভাগ আছে, যেখানে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কোনো অফিস নেই। কিছু বিভাগে এখনো নবীন শিক্ষকদের বসার জায়গা নেই। শিক্ষকদের অফিস শেয়ার করে বসতে হয়। একজন শিক্ষকের পড়াশোনা ও গবেষণাকাজের জন্য ব্যক্তিগত অফিস থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

রাবির শ্রেণীকক্ষগুলো প্রায়ই অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকে। ধুলাবালিতে ভরপুর শ্রেণীকক্ষে ক্লাস নিতে এবং করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কষ্ট হয়। তাছাড়া প্রচণ্ড গরম কিংবা শীতে শ্রেণীকক্ষে বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। স্বাভাবিকভাবে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় খালি গলায় কথা বলা কঠিন। পেছনের সারির শিক্ষার্থীরা অনেক সময় কথা শুনতে না পেরে অমনোযোগী হয়ে থাকে। কিছু বিভাগে হয়তো মাইক্রোফোনের মাধ্যমে পাঠাদানের সুযোগ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নেই।

বিভাগ থেকে একজন শিক্ষক ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা পান না। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক বছরে একটি বা দুটির বেশি মার্কার বিভাগ থেকে পান না। শুধু তা-ই নয়। বিভাগে কিংবা ফ্যাকাল্টিতেও ফটোকপি মেশিন কিংবা প্রিন্টারের ব্যবস্থা নেই। সময় করে ফটোকপি দোকানে যেতে হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে সময় নিয়ে কাজ করতে হয়। একজন শিক্ষকের জন্য বই কেনার জন্য বছরে বরাদ্দ থাকে মাত্র ২ হাজার টাকা, যা প্রয়োজনীয় বই কেনার জন্য অন্তরায়। অথচ এ সুযোগ-সুবিধা বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিভাগ থেকেই নিশ্চিত করা হয়। তাছাড়া বিভাগে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে পর্যাপ্ত ও ভালো কম্পিউটার ল্যাব নেই।

সেমিনার/লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের অভাব। বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির মাধ্যমে পর্যাপ্ত প্রবন্ধ/নিবন্ধ পাওয়ার বিষয়টিও সীমিত। সীমিত মানে একেবারেই সীমিত। আমাদের বিভিন্ন সময় লেখকদের ই-মেইল করে কিংবা যারা দেশের বাইরে পড়াশোনা করছেন, তাদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রবন্ধ/নিবন্ধ সংগ্রহ করতে হয়। তাছাড়া দেশ ডিজিটাল হলেও লাইব্রেরি এখনো ডিজিটাল নয়। সারা বিশ্বেই উন্নত মানের পড়াশোনা ও গবেষণা করার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে, লাইব্রেরিতে অবাধ তথ্যের সহজলভ্যতা। কিন্তু তা আমাদের নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় বরাদ্দ নেই। এটি নতুন কোনো অভিযোগ নয়। এ গবেষণা বরাদ্দ যেমন শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নেই, ঠিক তেমনি শিক্ষার্থীদের এমফিল/পিএইচডি করানোর ক্ষেত্রেও নেই। গবেষণায় বরাদ্দ না থাকায় থিসিসভিত্তিক কোর্স চালু করাও সম্ভবপর হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবন্ধ/নিবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। সে রকম কোনো সুবিধা প্রদান করা হয় বলে জানা নেই। তাছাড়া বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি মানসম্মত ভাষা (ইংরেজি) এডিটিং সার্ভিস থাকা প্রয়োজন। সেটিও নেই। যেহেতু ইংরেজি আমাদের প্রথম ভাষা নয়, সেহেতু আমাদের এ সমস্যা প্রকটভাবেই মোকাবেলা করতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দিন পরপর সাইকেল-মোটরসাইকেল চুরিও নিয়মিত ঘটনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গাড়ি, মোটর সাইকেল কিংবা সাইকেল রাখার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। যদিও ইদানীং দুটো জায়গায় স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তা অপ্রতুল। প্রতিটি ফ্যাকাল্টিতে একটি করে গ্যারেজ কিংবা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি। পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় অর্থ ব্যয় এবং শারীরিক পরিশ্রম দুটোই হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় হল ডাইনিংয়ে বরাবরই শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। এক গবেষণায় দেখেছিলাম, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এ সমস্যা রাবিতেও বিদ্যমান। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়, তা কখনই মানসম্মত নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে টয়লেট ব্যবস্থা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। উদাহরণস্বরূপ, রবীন্দ্র কলাভবনের টয়লেটগুলো দুর্গন্ধযুক্ত। তাছাড়া একেবারে প্রবেশপথে টয়লেটগুলো থাকার কারণে সকাল সকাল বাজে একটা মুড নিয়ে অফিসে যেতে হয়। তাছাড়া টুকিটাকি চত্বরে প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এগুলো সংস্কারে পর্যাপ্ত পদক্ষেপে নেই।

ক্যাম্পাসে সন্ধ্যার পর চুরি-ছিনতাই নিয়মিত ঘটনা। এসব প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ বহু বছর ধরেই পরিলক্ষিত হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নবজাতকের দুগ্ধপানের কোনো ব্যবস্থা নেই। কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ করেছি, কেউ কেউ বাধ্য হয়ে শিশুকে বারান্দায় বিশেষ ব্যবস্থায় দুগ্ধ পান করিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় এখন বিকাল ৫টা পর্যন্ত হওয়ায় দুপুরের খাবার খাওয়াটা বাধ্যতামূলক। তবে প্রতিটি বিভাগ এমনকি ফ্যাকাল্টিতেও ন্যূনতম একটি করে খাবারের রুম নেই, যেখানে শিক্ষকরা খাবার খেতে পারেন। রাবিতে একটি ইনডোর স্টেডিয়াম আছে। সেখানে পানি পানের কোনো ব্যবস্থা নেই। সংস্কারের অভাবে বৃষ্টির দিন এটি খেলার উপযোগিতা হারিয়ে ফেলে। টিনের চাল ভেদ করে বৃষ্টির পানিতে ফ্লোর ভিজে যায়। রাবিতে মশার উৎপাতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়। কিন্তু মশা নিধনে কাযর্কর ব্যবস্থা নেই।

সর্বোপরি সময়ের দাবি এবং সরকারের অঙ্গীকার অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজড হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু এখনো প্রশাসনিক কাজ সেই প্রথাগতভাবেই করা হচ্ছে। গত ১০ বছরে দেশের বহু ক্ষেত্রই তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র ইন্টারেন্ট প্রদান ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন সাধন হয়নি। এ রকম আরো অনেক সমস্যা রাবিতে রয়েছে। এগুলো সমাধানে চেষ্টা করা হয়েছে কিনা জানা নেই। আমার জানার ইচ্ছা, ৮০ লাখ টাকা দিয়ে পুকুর সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাভ কী? তিনটি যুক্তি তুলে ধরে পুকুর সংস্কার করা হচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে, পুকুরে শিক্ষার্থীদের গোসল এবং সাঁতার কাটার জন্য। এ পুকুরগুলোয় কি কোনো শিক্ষার্থী গোসল কিংবা সাঁতার কাটতে আসে? যে সাতটি পুকুর সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, সেখানে মেয়েদের হলসংলগ্ন পুকুরও আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মেয়েরা কি পুকুরের গোসল এবং সাঁতার কাটতে যাবে? মেয়েরা কেন ছেলেরাও প্রকাশ্যে এ পুকুর দুটিতে গোসল ও সাঁতার কাটতে যাবে না। এমনকি ছেলেরাও অন্যসব পুকুরে গোসল কিংবা সাঁতার কাটতে যাবে না। যদি শিক্ষার্থীদের গোসল কিংবা সাঁতারের কথা বিবেচনা করা হতো, তাহলে আলাদা দুটি আধুনিক সুইমিং পুল নির্মাণ করা অধিকতর যৌক্তিক ছিল না? দ্বিতীয়ত. ফিশারিজ বিভাগের গবেষণাকাজের জন্য এ সংস্কার করা হচ্ছে। যুক্তিটি আমার কাছে যথাযথ মনে হয়নি। পুকুরে মাছ চাষ এবং গবেষণা করার জন্য ফিশারিজ বিভাগের জন্য আলাদা কোনো জায়গায় পুকুর নির্মাণ বা সংস্কার করা যেত। যেখানে সবার অবাধ বিচরণে সীমাবদ্ধতা থাকত। যদি গবেষণার কাজেই পুকুর সংস্কার করা হয়, তাহলে তাতে গোসল ও সাঁতার কাটা কতটুকু যৌক্তিক ব্যাপার? শিক্ষার্থীরা যদি গোসল করতেই যায়, তাহলে তারা নিশ্চয় সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করবে। কাপড় ধোয়ার সাবান ব্যবহার করবে। এতে মাছ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার মাছ চাষের জন্য যে খাবার ব্যবহার করা হবে, তাতে গোসল করাও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাছাড়া গবেষণার জন্য সাতটি পুকুরের প্রয়োজন হয় না। তৃতীয়ত. উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধন ও সংরক্ষণের জন্য এ সংস্কার। এ পুকুরগুলো কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শন নয় যে তা সংরক্ষণ করা খুব জরুরি। আর একটি পুকুর সংস্কারে প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় বাস্তবসম্মত নয়। এরচেয়ে বড় কথা, যেখানে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানের জন্য কোনো টাকা বরাদ্দ হয় না, সেখানে পাশাপাশি পুকুর সংরক্ষণের প্রশ্ন আসছে কী করে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যা মূলত অর্থের অভাবেই সমাধান করা যায় না। কেউ কেউ বলতে পারেন, এত অল্প টাকায় এত সমস্যা কীভাবে সমাধান সম্ভব? আমার মতে, এ টাকা দিয়ে অনেক বিকল্পের মধ্যে অন্তত একটি করা যেত। এ টাকা দিয়ে অন্তত লাইব্রেরিকে বিশ্বমানের করা যেত। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত রিসোর্সের অভাব থাকলে মানসম্মত জ্ঞান অর্জন সম্ভব হয় না। অনেক শিক্ষক আছেন, যারা একটু আর্থিক সহায়তা পেলে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষায় যেতে পারতেন। কিংবা এ টাকা দিয়ে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীকে এমফিল/পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ করে দেয়া যেত।

আমাদের সম্পদ খুব সীমিত—এটা আমরা জানি। আবার কোন কোন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার, তাও আমরা জানি। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান উন্নয়ন না করে পুকুর উন্নয়নে কী লাভ হচ্ছে, তা বোধগম্য নয়। জনগণের কষ্টের টাকা দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চলে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত সমস্যার সমাধান না করে পুকুর সংস্কারে নামে অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি হোক, তা আমিও চাই। তবে যে সমস্যাগুলো আগে সমাধান করা দরকার, তা আগে করাই যুক্তিযুক্ত।

সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক। অর্থ বরাদ্দের স্বল্পতার জন্য শুধু শুধু সরকারকে দোষারোপ করে লাভ নেই। আসুন আমরা অদ্ভুত, অবাস্তব ও হাস্যকর চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিই। যে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জ্ঞানার্জনে নতুন দিক উন্মোচিত হবে। আমার এ চিন্তা কাউকে ছোট বা খাটো করার জন্য নয়। এ মতামতের জন্য প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বদলে যাবে, তাও মনে করি না। তবে ভবিষ্যতে সরকারি অর্থের অপচয় থেকে বিরত থাকতে একটু হলেও চিন্তার উন্মেষ ঘটাবে—এমনটি প্রত্যাশা করি।

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065710544586182