যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসএসসি পরীক্ষা, স্কুল ভর্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি নিয়েছে তাদের সে অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
যেসব প্রতিষ্ঠান ফেরত দিবে না সেইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও কমিটি বাতিলসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন মন্ত্রী।
বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ নির্দেশের কথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়ে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হবে।
গত তিনবছর যাবত একই হুমকি দিলেও তা মান্য করেনি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। আবার ফি বেশি নেওয়া নামীদামী প্রতিষ্ঠানে মন্ত্রী, এমপি, আমলা ও অন্যান্য অফিসারদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করা ছাড়াই প্রাইভেটও পড়েন এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছেই।
আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক হোমরাচোমড়ারা ক্যামব্রিয়ানসহ ভুইফোঁড় ও অতিরিক্ত ফি আদায় করা প্রতিষ্ঠানে টাকায় পিকনিক করেন, বিদেশ ভ্রমণ করেন আবার একই পুরস্কারও গ্রহণ করেন।
নতুন বেতন কাঠামোতে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বেতন নতুন বছরের শুরুতে ব্যাপক হারে বাড়ানো হয়, যার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন অভিভাবকরা।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৭ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বর্ধিত বেতন ও ফি আদায় না করার নির্দেশ দেয়।
মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, “সরকারের নির্দেশনা ছাড়াই বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বর্ধিত হারে মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা অনুযায়ী সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদকে বেতন ও ফি’র হার নির্ধারণ করতে হবে বলে আদেশে জানানো হয়।
“এ প্রেক্ষাপটে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বর্ধিত বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হলো।”
এর আগে গতবছর ১ ডিসেম্বর হাই কোর্টের এক আদেশে এসএসসির ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি অর্থ আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
ফরম পূরণে বাড়তি ফি আদায়ের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই রুল জারি করে।
আদেশে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফির বাড়তি অর্থ আদায় করা হয়েছে, তারা নিজ নিজ শিক্ষাবোর্ডে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানাবে। এ বিষয়ে বোর্ডগুলোকে অতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। কি ব্যবস্থা নেওয়া হলো তা জানিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানদের প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেয় আদালত।
সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “কারা কারা টাকা নিয়েছে তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। এরপরও আমরা সময় দিচ্ছি। যারা ফেরত দেবে তাদের নাম তালিকায় রাখা হবে না। সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন