গাইবান্ধা সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিদ্যালয় থেকে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। দাপ্তরিক কাজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মরিয়ম বেগমকে শিক্ষা কার্যালয়ে যেতে হলে ওই দিন সহকারী শিক্ষক মোছা. মরিয়ম বেগমকে একাই শিশু শ্রেণিসহ ছয়টি শ্রেণির পাঠদান করাতে হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি নুরুন্নাহার বেগম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, এই বিদ্যালয়ে মোট ছয়জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরে মো. শফিকুল ইসলাম, মো. নুর আলম সিদ্দিকী প্রধান শিক্ষক হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। সহকারী শিক্ষক আল-আমিনও অন্য একটি বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে গেছেন। আর পিটিআইতে ট্রেনিংয়ের জন্য গাইবান্ধায় রয়েছেন সহকারী শিক্ষক সান্তনা রানী। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক মাত্র দু’জনে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান দিয়ে আসছেন।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম ও আরিফ বলেছে, দ্বিতীয় অধিবেশনে তৃতীয় থেকে ৫ম শ্রেণি তিনটি ক্লাস দুইজন শিক্ষককেই নিতে হয়। অনেক সময় স্যার আমাদের পড়া দিয়ে আবার অন্য ক্লাসে চলে যায়। এ জন্য স্যার আমাদের পড়া ভালোভাবে আদায় করার আগেই ক্লাসের সময় চলে যায়। সামনে আমাদের সমাপনী পরীক্ষা, প্রস্তুতিও নেই তেমনটা। শিক্ষক ঘাটতি থাকায় তাদের পড়া লেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানায় তারা।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মজনু মিয়া দৈনিক শিক্ষা ডটকম-কে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মরিয়ম বেগম দাপ্তরিক কাজে উপজেলায় শিক্ষা কার্যালয়ে গেলে সহকারী শিক্ষক মরিয়ম বেগমকে একাই সামলাতে হয় সব ক্লাস। এ কারণে চিৎকার-চেঁচামেচিতেই সময় পার হয় শিশু শিক্ষার্থীদের। শিক্ষক যে শ্রেণিতে প্রবেশ করেন, সে শ্রেণিতে চেঁচামেচি বন্ধ হয়। বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার চেঁচামেচি শুরু হয়। দুপুরে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসেও চলে একই অবস্থা।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোছা. মরিয়ম বেগম দৈনিক শিক্ষা ডটকম-কে বলেন, ‘শিক্ষক–সংকটের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজল কুমার সরকার দৈনিক শিক্ষা ডটকম-কে বলেন, অন্য বিদ্যালয় থেকে প্রেষণে কমপক্ষে ১ জন শিক্ষক এনে ওই বিদ্যালয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।