সান্ধ্যকালীন কোর্সের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী? - Dainikshiksha

সান্ধ্যকালীন কোর্সের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করে। সাধারণ অর্থে জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জন করার নামই শিক্ষা। ব্যাপক অর্থে পদ্ধতিগতভাবে জ্ঞানলাভের প্রক্রিয়াকে শিক্ষা বলে। রোববার (৭ জুলাই) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন মো. জাহানুর ইসলাম।

এককথায়, শিক্ষা হল সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের অব্যাহত অনুশীলন। আজ সমাজের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে তো?

এ প্রশ্ন ওঠার পেছনে কারণও আছে। কয়েক বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ডিপার্টমেন্টে চালু হয়েছে সান্ধ্যকালীন কোর্স। এসব কোর্স চালু করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল- যারা দিনের বেলায় নানা কারণে ক্লাস করতে পারেন না, তারা যাতে এসব কোর্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে সেভাবেই দেখেছিল। আজকের মতো ব্যবসায়িক চিন্তা থেকে সান্ধ্যকালীন কোর্স শুরু হয়নি। কিন্তু আজ এর চরম ব্যতিক্রম লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু হওয়ার পর থেকেই এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এসব কোর্সে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে বহুগুণ। এসব কোর্সে যারা ভর্তি হন, তাদের বেশিরভাগই পেশাজীবী। তাদের চাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছেনও তাদের অসুবিধার কথা। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে তো হিতে বিপরীত অবস্থা। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে যেখানে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করে দেয়ার কথা, সেখানে যে ডিপার্টমেন্টগুলোতে এখনও সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু হয়নি, সেসব ডিপার্টমেন্টেও তা খোলার চেষ্টা চলছে। এর অন্যতম কারণ হল, যত বেশি ডিপার্টমেন্টে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু হবে, তত বেশি ছাত্রছাত্রীর ভর্তির সুযোগ তৈরি হবে। আর যত বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবে, তত বেশি টাকা। তাই নতুন নতুন বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর এত তোড়জোড়।

কিন্তু এসব কোর্সে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং যারা সান্ধ্যকালীন কোর্সের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের বিভিন্ন উপায়ে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে দেশে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রির প্রসার বাড়ছে ঠিকই; কিন্তু গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরাও গুণগত মানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ আছে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকের কাছে তা নিয়মিত কোর্সের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ বর্তমানে সান্ধ্যকালীন কোর্সে পড়ানোটা খুবই লোভনীয় একটি ব্যাপার।

যিনি যত বেশি কোর্স নেন তিনি তত লাভবান হন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠদান অনেক শিক্ষকের কাছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে গৌণ হয়ে পড়েছে। বিভাগে যে ক্লাস রুটিন দেয়া হয়, অনেক সময় তা অনুসরণ করেন না সান্ধ্যকালীন কোর্সে ক্লাস নেয়া অনেক শিক্ষকই। ঠিকমতো ক্লাস না নেয়ার কারণে সিলেবাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এ রকম পরিস্থিতিতে সেমিস্টারের শেষ মুহূর্তে এসে অনেক শিক্ষক বিশেষ সাজেশন দিয়ে দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতে চান। আবার অনেক শিক্ষক পরীক্ষার আগে আগে সিলেবাস শেষ করার তাগিদে এত বেশি অতিরিক্ত ক্লাস নেন যে তা শিক্ষার্থীদের ওপর অহেতুক চাপ সৃষ্টি করে। তাই বলতে চাই, শিক্ষাকে পণ্য করা নয়, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সবাই উদ্যোগী হোন।

লেখক : প্রাবন্ধিক।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049519538879395