নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আলতাব হোসেন জিন্নাহর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বেতন-ভাতা তুলতে পারেননি শিক্ষকরা। এ ছাড়া শিক্ষকদের দ্বন্দের কারণে চলনবিলের এই শতবর্ষী স্কুলের পড়ালেখাও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা আলতাব হোসেন জিন্নাহ রাজনীতির পাশাপাশি উপজেলার তেরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি সেই প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র হাজিরা দিয়েই চলে আসেন বলে জানান ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহজাহান আলী। অথচ বিদ্যালয়টি থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, সম্প্র্রতি সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এরশাদুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। পরে শিক্ষক-কর্মচারীদের আবেদনের পর প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক নরেন্দ্রনাথ সরকারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয় জেলা শিক্ষা অফিস। এক চিঠির মাধ্যমে জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক নরেন্দ্রনাথ সরকারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়াসহ সব কাজে সহযোগিতার জন্য গত ৮ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সভাপতির কাছে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের সভাপতি আলতাব হোসেন সহকারী শিক্ষক নরেন্দ্রনাথ সরকারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়া শিক্ষক এরশাদুল ইসলামকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবেই বহাল রাখেন। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষককে বেতন-বিলে স্বাক্ষর করতে না দেয়ার কারণে ব্যাংক থেকে তা তুলতে পারছেন না শিক্ষকরা।
অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে নিয়োগের জন্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা নিয়ে রফিকুল ইসলাম নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়োগ দিয়েছেন বিদ্যালয় সভাপতি আলতাব হোসেন। তিনি চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সহকারী শিক্ষক মীর সোলায়মান আলী, কারিগরি শাখার মোসাদ্দেক হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক স্কুলের হাজিরা খাতা স্বাক্ষর করেই চলে যান। ফলে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক এরশাদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, প্রতিষ্ঠানে দুটি গ্রুপের কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আর তিনি এখন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নেই। তবে স্কুল থেকে বেতন দিয়ে জীববিদ্যার শিক্ষক হিসেবে রাখার কথা হওয়ায় তিনি নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছেন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বিদ্যালয়ের সভাপতি আলতাব হোসেন জিন্নাহ বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে বেতন বিলে স্বাক্ষর করে দিয়েছি। এ ছাড়া ১৫ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেয়ার কথা সঠিক নয়, কেউ যদি অভিযোগ করে থাকে তাহলে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।