করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় বড় ও সেবা শিল্প এবং এসএমই প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার চলতি মূলধন ঋণ জোগানে বাণ্যিজিক ব্যাংকগুলোর যাতে কোনো সংকট না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় তারল্য সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংরক্ষিত ব্যাংকগুলোর বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার (সিআরআর) আরো ১ শতাংশ কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার রেপো রেটও।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি পূরণে গত রবিবার ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় বড় ও সেবা শিল্প এবং এসএমই প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যাংকঋণ সুবিধা রাখা হয়েছে। আর এই টাকা দিতে হবে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব উৎস থেকে। এক্ষেত্রে তারল্য নিয়ে যাতে কোনো সংকট তৈরি না হয় সেজন্য ব্যাংকগুলোতে টাকার সরবরাহ বাড়াতে সিআরচর ও রেপো রেট কমিয়ে আনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উল্লেখ্য, যে সুদহারে বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়, তা-ই রেপো রেট বা নীতি সুদহার। অন্যদিকে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষণ করতে হয়। এর মধ্যে যে অংশ নগদে রাখতে হয়ে সেটিই সিআরআর। বাজারে নগদ তারল্যের জোগান দিতেই মুদ্রানীতির এ গুরুত্বপূর্ণ টুলস ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সিআরআর কমানো নিয়ে সার্কুলারে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে তাদের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ন্যূনতম ৫ শতাংশ ষান্মাসিক ভিত্তিতে এবং অন্যতম সাড়ে ৪ শতাংশ দৈনিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা রাখতে হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সম্প্রতি ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ সমূহ বাস্তবায়নে মুদ্রাবাজারে প্রয়োজনীয় তারল্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে আগামী ১৫ এপ্রিল হতে নগদ জমার হার মাসিক ভিত্তিতে ন্যূনতম ৪ শতাংশ এবং দৈনিক ভিত্তিতে ন্যূনতম সাড়ে ৩ শতাংশ সংরক্ষণ করতে হবে।
অন্যদিকে আরেক সার্কুলারে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুবিধা বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে শতকরা ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এ সার্কুলারেও সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে মুদ্রাবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর কথা উল্লেখ করা হয়।