সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে সন্দেহভাজনরা নজরদারিতে রয়েছেন। কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। তার আগ পর্যন্ত কোনো আতঙ্ক ছড়ানো হবে না। এছাড়া, নগরজুড়ে রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
সিটি নির্বাচনের আগ মুহূর্তের নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নির্বাচনি প্রচার প্রচারণার কাজে ঢাকার বাইরে থেকেও মানুষ এসেছে এটি অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। আমাদের সদস্যরা তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তারা যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি রয়েছে।
প্রায় একই মত জানিয়ে, র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, যারা নির্বাচনি প্রচারণায় রাজধানীর বাইরে থেকে এসেছেন তারা থেকে গেলেও আমরা কিছু বলবো না। কারণ দেশের নাগরিক হিসেবে থাকার অধিকার তার আছে। কিন্তু থেকে গিয়ে যদি ভোটারদের স্বাভাবিক চলাচলে বাধাগ্রস্ত করেন তবে কোনো ছাড় নেই। সে জন্য আমাদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
দুই সিটি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৪০ হাজার সদস্য। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি টহল কাজে নিযুক্ত আছে পু্লিশ, র্যাব, আনসার ও এপিবিএনের সদস্যরা। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নেমেছে ৬৫ প্লাটুন বিজিবি।
নির্বাচন কমিশনের চাহিদা ও স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে তারা। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের কথা জানিয়েছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা উত্তরে ৫৪টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের নির্বাচনে প্রায় আড়াই হাজার ভোট কেন্দ্র ও এর আশপাশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে র্যাব, পুলিশ, আনসার ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরা। ভোটের আগে ও পরে এবং ভোটের দিন- এ তিন ধাপে ভোটারদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে তারা। সেই সঙ্গে দুই সিটিতে দায়িত্ব পালন করছেন ২৫৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিরাপত্তায় কাজ করবে পুলিশের ৫৪টি মোবাইল ফোর্স, ১৮টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ২৭টি রিজার্ভ স্টাইকিং ফোর্স। সেই সঙ্গে মাঠে থাকবে র্যাবের ৫৪টি টিম এবং ২৭ প্লাটুন বিজিবি।
একইভাবে সাজানো হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকা। এ এলাকায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশের ৭৫টি মোবাইল ফোর্স, ২৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ২৫টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স। সেই সঙ্গে মাঠে থাকবে র্যাবের ৭৬টি টিম ও ৩৮ প্লাটুন বিজিবি।
এছাড়া, নির্বাচনের দিন সাধারণ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে ১৮ জন পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির সদস্য। সেই সঙ্গে দুই সিটিতে র্যাবের ১০টি ভ্রাম্যমাণ টিম ও ১০ প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আকাশে থাকবে হেলিকপ্টার, সোয়াত ও র্যাবের ডগস্কোয়াড এবং ক্রাইসিস রেসপনস টিম।