সিরাজদিখান খারশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা বালু ভরাট করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় খারশুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। ক্ষমতাসীন স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ কাজে মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধা দিলেও তাদের পাত্তা দিচ্ছে না দখলদাররা।
স্কুলটি দখলমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। চিত্রকোট ইউনিয়নের ওই স্কুল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বিদ্যালয় সংলগ্ন খালের কিছু জায়গায় উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই স্কুল ভবন নির্মাণ করে রেখেছেন।
নতুন করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরও বেশ কিছু জায়গা বাঁশের বেড়া, বালু দিয়ে দখল করে স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। খারশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৭২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে স্থানীয় ব্যক্তি জ্ঞানেন্দ্র রায় ও জ্যোতিষ চন্দ্র রায় মিলে ৩৩ শতক জায়গা দান করেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, খারশুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ কিছুদিন ধরে বিদ্যালয়ের পতিত জায়গা দখল করে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ করছেন। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
গত বুধবার স্থানীয় অ্যাডভোকেট মো. মহসিন, মাসুদুর রহমান, প্রাক্তন শিক্ষক অনিল চন্দ্র মণ্ডল ও বিদ্যালয়ের জমিদাতার নাতি অমল রায়সহ অনেকেই বলেন, সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহস্যজনক কারণে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনন না। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে খারশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার ও পরিচালনা পর্ষদের লোকেরা দ্বন্দ্ব তৈরির উদ্দেশ্যে বালু ভরাট করছে।
কেবল এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নয়, আশপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের শিশুরা এ স্কুলে পড়াশুনা করে। এছাড়া প্রায় চার যুগের বেশি সময় ধরে এ স্কুলের জায়গা এভাবে পড়ে আছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি সমীর বাড়ৈ বলেন, দিন দিন স্কুলের জায়গাটি দখল হয়ে যাচ্ছে। তিনি বাধা দিলেও কাজ হয়নি বরং ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে কিছু অসামাজিক লোক মিথ্যা কথা প্রচার করছে।
অভিযুক্ত খারশুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, খারশুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কতটুকু জায়গা আছে তা আমার জানা নেই; তবে পরিচালনা পর্ষদের সবার সঙ্গে মিটিং করেই ওই জায়গা বালু দিয়ে ভড়াট করা হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
বিষয়টি খতিয়ে দেখছি; সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা হতে পারে না। এ বিদ্যালয়ের ফ্লাডশেল্টার বিল্ডিয়ের জন্য একটি প্রস্তাব রয়েছে- জায়গা না থাকলে বিল্ডিংটি করা যাবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফিকুন নাহার বলেন, আমি ওই স্কুলে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম; এ ব্যাপারে কিছুই বলতে চাচ্ছি না এখন।