সিলেটের প্রাচীন ও বৃহত্তম কারিগরি শিক্ষা বিদ্যাপীঠ সিলেট সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীকালে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দুই বছর মেয়াদী ট্রেড কোর্সে (এসএসসি-ভোকেশনাল ও এইচএসসি-ভোকেশনাল) ১০টি বিভাগ এবং ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ২টি বিভাগ চলমান রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
বর্তমানে সেই শিক্ষার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি। প্রতিষ্ঠানটির ১০টি বিভাগ- সিভিল, কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, ওয়েল্ডিং, উড্ ওয়াকিং, ফার্ম মেশিনারি, মেশিন টুলস্ অপারেশন, আর.এস.সি ও অটোমোবাইল বিভাগের মধ্যে কর্মরত আছেন ইলেকট্রিক্যাল, ওয়েল্ডিং, উড্ ওয়াকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। এদিকে ১০টি বিভাগের ১০ জন ইনস্ট্রাক্টরের মধ্যে প্রায় পদই শূন্য রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগের শিক্ষকরা অবসরে চলে যাওয়া ও শিক্ষক বদলির কারণে শিক্ষক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। কারণ গত কয়েক বছরে এ প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এছাড়া কলেজটিতে রয়েছে কর্মচারী সংকটও।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের এক শিক্ষর্থী জানায়, যন্ত্রপাতি ও শিক্ষক সংকটের কারণে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। এ কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রতি সপ্তাহে একেকজন শিক্ষককে গড়ে ৩৫টি ক্লাস নিতে হয়। এতে শিক্ষকদের ওপর যেমন বাড়তি চাপ পড়ছে, তেমনি শিক্ষার্থীরাও তেমন উপকৃত হচ্ছে না। এ ছাড়া দ্বিগুণেরও বেশি দায়িত্ব পালন করেও সে অনুযায়ী বেতন না পাওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যেও হতাশা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুজন শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক না থাকায় তাঁদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। ব্যবহারিক ক্লাসের যন্ত্রপাতির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাইদুর রহমান স্বীকার করেন, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীর মারাত্মক সংকট চলছে। তিনি বলেন, কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী অবসরে গেলে তাঁর জায়গায় আর কাউকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষক সংকটের কারণে প্রায় বিষয়ে অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে প্রতি মাসেই কর্তৃপক্ষের বরাবর প্রতিবেদন পাঠিয়েও কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।