সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শরীরে আগুন দেওয়ার পর স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছিল। এরই মধ্যে ওই ঘটনায় ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ চারজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নুসরাতের ঘটনায় প্রণীত পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই ব্যবস্থা নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর। একই প্রতিবেদনে নুসরাতকে বাঁচাতে কনস্টেবল রাসেলের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। এ জন্য তাকে পুরস্কৃত করার প্রস্তাবও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তদন্ত কমিটির সদস্যদের দৃষ্টিতে নুসরাতের ঘটনায় ফেনীর এসপিসহ সেখানে তৎকালীন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ রয়েছে। একই সঙ্গে আগুন লাগানোর পরপরই তাকে কোলে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কনস্টেবল রাসেলের ভূমিকাও ছিল সাহসিকতাপূর্ণ। এ ব্যাপারে রাসেল জানান, নুসরাতের জীবন রক্ষার চেষ্টা করতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেন।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের শরীরে আগুন দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে কাপড়ে ঢেকে পুলিশ কনস্টেবল রাসেল কোলে করে অন্যদের সঙ্গে দ্রুত সিএনজিযোগে হাসপাতালে নিয়ে যান। এর আগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নুসরাত মাদরাসার আশ্রয় কেন্দ্রের ছাদ থেকে নিচে নেমে এলে কনস্টেবল রাসেল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার শরীরের আগুন নেভান। এ সময় রাসেলের হাতও পুড়ে যায়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনস্টেবল রাসেল নুসরাতের শরীরের আগুন নিভিয়ে দ্রুত হাসপাতালে না নিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হতো। ঘটনার দিন সকাল পৌনে ১০টায় মাদরাসার গেটে একজন এসআইর নেতৃত্বে রাসেলসহ তিন কনস্টেবল দায়িত্বরত ছিলেন। কিন্তু অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারে মাদরাসার দারোয়ান মো. মোস্তফা ও কনস্টেবল রাসেল ছাড়া অন্য কেউ সহযোগিতা করেনি।