নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা দেয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকা সেই প্রতিবন্ধী মাহিবুলের পড়ালেখার সার্বিক দায়িত্ব নিলেন নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল। বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাহিবুলের বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তার পড়ালেখার সার্বিক দায়িত্ব নেয়ার কথা জানান এমপি বকুল।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত দেখে মাহিবুলের বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। একজন প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ালেখা করার প্রবল আগ্রহ দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। মাহিবুলের বাবা-মা তার শিশুকে বোঝা মনে না করে পড়ালেখায় উৎসাহিত করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন এমপি বকুল। মাহিবুলের পাশে দাঁড়ানোয় এমপি বকুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে মাহিবুলের পরিবার।
আরও পড়ুন: ‘ছায়া পরীক্ষা’ দেয়ার সুযোগ পেল মাহিবুল
গত রোববার প্রথম দিনে পিইসি পরীক্ষা দেয়ার আশায় পুরো আড়াই ঘণ্টা পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটে দাঁড়িয়ে ছিল মাহিবুল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি নজরে এলে গত ১৮ নভেম্বর সকালে আবারও মাহিবুলকে গেটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সমাজসেবা অফিসার রেজাউল করিম।
তিনি বিষয়টি নিয়ে ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের সঙ্গে আলোচনা করেন।
পরে মাহিবুলকে ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে পরীক্ষার আদলে এক ছায়া পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেই পরীক্ষা শুধুই শিশু মনের মাহিবুলকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। এমন সিদ্ধান্তের পর কোনো নিয়মিত পরীক্ষার কেন্দ্রে নয়, পার্শ্ববর্তী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন স্মৃতি বাক, শ্রবণ ও অটিস্টিক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে মাহিবুল।
মাহিবুলের বাবা কামরুল আহসান খান জানান, পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই পরীক্ষা দেয়ার জিদ ধরেছিল মাহিবুল। তাই উপায় না দেখে তাকে নিয়ে এসেছিলাম পিইসি পরীক্ষার কেন্দ্রে। স্কুল ড্রেস পরে পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের গেটে পুরো পরীক্ষার আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল মাহিবুল। এটি দেখে ইউএনও তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়ায় মাহিবুল খুব খুশি।
উল্লেখ্য, উপজেলার নওশেরা মহল্লার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী মাহিবুল কৃষি ও কারিগরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।পরীক্ষা দেয়ার শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নেই ভেবে বাবা-মা এ বছর ফরম পূরণ (ডিআরভুক্ত) না করায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না সে।