সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিয়োগবঞ্চিত প্রতিবন্ধী মো. সুমনের পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগ না দেয়ায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ পাঁচজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া, তাকে সহযোগিতা করেন মো. মনিরুল ইসলাম রাহুল ও মো. সোহরাওয়ার্দী সাদ্দাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ বাশার।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী সিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া। এর আগে সুমনের সহকারী শিক্ষক পদ সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিটটি দায়েরও করেন সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
তিনি জানান, ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগ না দেয়ায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেন। একই সাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সহকারী শিক্ষকের পদ সংরক্ষণের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
আইনজীবী সিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া বলেন, এই রিট পিটিশনটি আমি বিনা ফিতে দায়ের করেছি। ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। প্রতিবন্ধী মো. সুমন ‘প্রতিবন্ধী কোটায়’ সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করে সফলতার সঙ্গে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু তাকে ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
পরে সুমন তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আরটিআই) ও উপ-পরিচালক (সংস্থাপন) মো. দেলোয়ার হোসেন তথ্য দিয়ে চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে দেখা যায়, ঢাকা জেলার ডেমরা থানার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী মো. সুমন লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ নম্বর ও মৌখিক পরীক্ষায় ১১ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তখন ঢাকা জেলার ডেমরা উপজেলায় ১৭ জনকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হলেও ১০ শতাংশ কোটাভুক্ত সুমনকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। যা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগের সমতার লঙ্ঘন।
এর প্ররিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বিনা ফিতে মানবিক দিক বিবেচনায় রিট পিটিশনটি দায়ের করি আমি- বলেন সিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া।