২০১৬ সালের স্থগিতকৃত সোনালী ব্যাংকের তিনটি পদে ২ হাজার ২০১ জন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর আইনি বাধা উঠে যাওয়ায় পরীক্ষা কার্যক্রর ফের শুরু করতে যাচ্ছে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি) সচিবালয়। এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই ব্যাংকের নিয়োগের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা শেষ করতে তোড়জোড় শুরু করেছে বিএসসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ আদালত এই নিয়োগপ্রক্রিয়ার ওপর থেকে স্থিতাবস্থা তুলে নেওয়ার পরপরই আলাদা তিনটি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ফের কার্যক্রম শুরু করে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে নিয়োগের জন্য কর্মী বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা বিএসসি সচিবালয়।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও অফিসার (ক্যাশ) পদে শূন্যতার ভিত্তিতে ২ হাজার ২০১ জন কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএসসি। আলাদা তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে এই পদগুলোতে নিয়োগের জন্য কর্মী বাছাই করার কথা থাকলেও এ নিয়ে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ার ওপর স্থিতাবস্থা আরোপ করেন।
সূত্র জানায়, সিনিয়র অফিসার ও অফিসার পদে নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সব আবেদনকারীই এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এই দুটি পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিল ৫ লক্ষাধিক প্রার্থী। তবে অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় যেসব প্রার্থী এর আগে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করেছিল শুধু তাদেরই এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও অফিসারের (ক্যাশ) ২ হাজার ২০১টি শূন্য পদে কর্মী নিয়োগে ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই তিনটি পদে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লাখ চাকরিপ্রার্থী; কিন্তু এ বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করে আগের ৪৭৪ প্রার্থী। রিটকারীদের দাবি ছিল, একই ব্যাংকে ১ হাজার ৭০৭টি পদে নিয়োগের জন্য ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফলের ভিত্তিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকাও করা হয়েছিল; কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে নিয়োগ না দিয়ে নতুন করে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় আগের বিজ্ঞপ্তির আবেদনকারীরা এই রিটটি করে। ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় বছরখানেক ধরে নিয়োগপ্রক্রিয়ার ওপর স্থিতাবস্থা থাকার পর সম্প্রতি ওই আদেশ তুলে নেন আদালত।
এদিকে সম্প্রতি সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকসহ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বাতিলকৃত পরীক্ষা ফের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আরো বেশ কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিএসসি সচিবালয় সূত্র। জানা গেছে, ১২ জানুয়ারির ওই নিয়োগ পরীক্ষার অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বিএসসি সচিবালয়ের।