দীর্ঘ তিন বছর সৌদি আরবে অবস্থান করেও এমপিওভুক্ত হয়েছেন একটি মাদরাসার ভাগ্যবান সহকারি সুপার! আর সুপার অনুপস্থিত ছিলেন দীর্ঘ চার বছর। তবুও তিনি এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এ ঘটনা নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আমুয়া বাইদ আজাদিয়া দাখিল মাদরাসার। দীর্ঘ সময় মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও এমপিও পাওয়ায় অসন্তুষ্ট স্থানীয়রা। ভুয়া রেজুলেশন ও ভুয়া হাজিরা খাতা দেখিয়ে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত সুপার এবং সহকারী সুপার এমপিওভুক্ত হয়েছেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির আটজন সদস্য।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের করা অভিযোগে জানা যায়, টাঙ্গাইলের আমুয়াবাইদ আজাদিয়া দাখিল মাদরাসা ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হয়েছে। তবে মাদরাসার সুপার আরিফুল ইসলাম ৪ বছরে মাত্র ১৮ দিন অফিস করেছেন। এছাড়া দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের পৃষ্ঠপোষকতা, কমিটি গঠনের অনিয়ম আর্থিক লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সহকারী সুপার মো. হারুনুর রশীদ দীর্ঘ তিন বছর সৌদি আরবে অবস্থান করেও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। কমিটির সভাপতিকে ম্যানেজ করে সুপার ভুয়া রেজুলেশন ও ভুয়া উপস্থিতির খাতা তৈরি করেছেন। তাছাড়া বিপুল টাকা ঘুষের বিনিময়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপার যোগসাজশে সৌদি আরবে থাকার সময়েও সহকারী সুপারকে হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখানো হয়েছে। এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে জালিয়াত সুপার এবং সহকারী সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
এদিকে সৌদি আরবে থেকে এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী সুপার মো. হারুনুর রশীদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি ৪৫ থেকে ৫০ দিন হজ করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে ছিলাম। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে দেশে ফিরেছি। তবে, আপনি কবে গিয়েছিলেন?- দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে দীর্ঘ সময় আমতা আমতা করেন সহকারী সুপার। পরে তিনি জানান, জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার মো. আরিফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ৪ বছর সুপার অনুপস্থিত থাকলে মাদরাসা চালালো কে? তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন সুপার। তিনি বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলেই আমি উপস্থিত ছিলাম সে তথ্য বেরিয়ে আসবে।