সৌন্দর্য চেহারা বা শাড়িতে নয়, শিক্ষা ও যোগ্যতায় - দৈনিকশিক্ষা

সৌন্দর্য চেহারা বা শাড়িতে নয়, শিক্ষা ও যোগ্যতায়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আমার স্বল্প শিক্ষিতা মা বুঝতে পেরেছিলেন মেয়েদের প্রকৃত মুক্তি তাদের শিক্ষায়। একজন মেয়েকে মাথা উঁচু করে এই সমাজে বাঁচতে হলে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হবার বিকল্প পথ নেই। আজকের বাংলাদেশে মেয়েরা অনেক এগিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা পুরুষদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। মেয়েরা আজ বিভিন্ন পেশায় তাদের যোগ্যতা দিয়েই আলো ছড়াচ্ছেন। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) যুগান্তরে এ সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।  নিবন্ধটি লিখেছেন   ডা. জোবায়ের আহমেদ।

তারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,ব্যারিস্টার, আর্কিটেক্ট, পুলিশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কূটনৈতিক, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, কৃষিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, সব পেশায় নিজেদের শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন। মেয়েদের প্রকৃত সৌন্দর্য তার শিক্ষা ও যোগ্যতায়, চেহারায় নয়।

এটা যদি মেয়েরা তাদের অন্তরে গেঁথে নিতে পারে তবেই তারা তাদের ব্যক্তিত্ব ও কর্মের দ্যুতি ছড়িয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবে এই সমাজে। আমাদের এলাকার তাহমিনা আপা অনেক পুরুষদের চোখে তথাকথিত সুন্দরী বা রূপসী নন।

স্কুলে অনেক মেয়েরা তাকে কালীও বলতে শুনেছি কিন্তু সেই অজো পাড়া গাঁয়ের শ্যামল বর্ণের অদম্য মেধাবী মেয়েটি বেলজিয়ামের ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি লিউভেন থেকে মাস্টার্স করে এখন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর।

আমার কাছে তাহমিনা আপার মূল সৌন্দর্য তার শিক্ষা ও আজকের স্বাবলম্বী অবস্থান। যারা তাকে কালী বলতো তারা দেখতে রূপসী ছিল কিন্তু তারা আজ কোথায়? আমার এলাকার আরেক ছোট বোন কামরুন নাহার আপনাদের চোখে খাটো, বেঁটে লিলিপুট একটা মেয়ে।

কিন্তু অনন্য মেধাবী সেই মেয়েটি বিসিএস দিয়ে এখন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। অনেক লম্বা লম্বা ফর্সা মেয়ে তো ছিল তার ক্লাসে কিন্তু তারা আজ কোথায়?

তসলিমা নাসরীন বলেছিলেন, নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে সামান্য সচেতন হলে মেয়েরা নিশ্চয়ই বুঝতো যে জগতে যত নির্যাতন আছে মেয়েদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় নির্যাতন হলো, মেয়েদেরকে সুন্দরী হবার জন্য লেলিয়ে দেওয়া।

চেহারার সৌন্দর্য দিয়ে জীবনের কঠিন বাস্তবতায় যখন ঘোর অমানিশা নেমে আসবে তখন একাকী আলোকের খুঁজে দূর সমুদ্র পাড়ি দেওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে মেয়েদের জন্য।।

কিছুদিন আগে ফেসবুকে ভাইরাল হলো রেবেকা শফির একটা ভিডিও। ১৯৯৩-৯৪ সালের টেলিভিশন স্কুল বিতর্কের ফাইনালে উনি বলেছিলেন "একজন সৎ পরিশ্রমী, বিবেকবান মানুষ হতে পারলেই আমি খুশি। ছেড়ে দিয়ে আমি জিতে যেতে চাই" সেই রেবেকা শফি হার্ভাড ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে পিএইচডি করেছেন।

বর্তমানে জেনেটিক্স নিয়ে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ করছেন। অথচ সেই ভাইরাল ভিডিও এর কমেন্টে অনেকে লিখেছেন চেহারা ভালো না। বিয়ে তো হবে না। যারা কমেন্টে রেবেকার চেহারা ও বিয়ে নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি কোথায় পড়ে আছেন আর রেবেকা কোথায়?

আজকের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা এগিয়েছেন। অনেকে আলো ছড়াচ্ছেন কিন্তু তাদের চলার পথ এখনো মসৃণ নয়। মসৃণ জীবন তাকে কোন পুরুষ উপহার দিবে না। তার শিক্ষা ও যোগ্যতা এবং এর মাধ্যমে অর্জিত অবস্থান তাকে মসৃণ জীবন উপহার দিতে পারে। তখন শাড়ি পড়ুক বা কামিজ বা কুর্তি পড়ুক বা টপস জিন্স পড়ুক সব কিছুতেই সে অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে উঠবে।

লেখক: ডা. জোবায়ের আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক, ডা. জোবায়ের মেডিকেয়ার অ্যান্ড প্যাথলজি সেন্টার, বিয়ানীবাজার, সিলেট

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037591457366943