বুধবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার সৌম্য সরকার। পারিবারিক আয়োজনে গোপনে বিয়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও কনে প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজার সঙ্গে সৌম্যের জানাশোনা অনেক আগে থেকেই।
সোমবার খুলনায় কনের বাড়িতে হয়েছে আশীর্বাদ অনুষ্ঠান। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা শহরের মধ্য কাটিয়া এলাকায় সৌম্য সরকারের বাড়িতে সম্পন্ন হয়েছে ছেলের বাড়ির আশীর্বাদ।
কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে সৌম্যের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কার্যক্রম। তবে এরই মধ্যে সৌম্যর আশীর্বাদের বেশকিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায়, হরিণের চামড়ার তৈরি আসনের ওপর কখনও বসে আছেন, কখনও দাঁড়িয়ে সৌম্য। তার আশীর্বাদের সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয় হরিণের চমড়ার ওপরই।
এসব ছবি দেখানো হয় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে। এছাড়া একটি কলেজের অধ্যক্ষসহ সাধারণ মানুষকে দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়, সৌম্য সরকার দাঁড়িয়ে থাকা ওই আসনটি কিসের তৈরি বা কার? সবাই জানান, এটি যে হরিণের চামড়া তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সৌম্য সরকারের বাবা, সাবেক সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকারের কাছে। তিনি প্রশ্ন শুনেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আরও বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
ঘটনার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তারা জাতীয় দলের ক্রিকেটার, আমাদের দেশের সম্পদ। তাদের দেশের আইন মেনে চলা উচিত। তিনি আরও বলেন, ঘটনা সত্য হলে এ বিষয়ে আমরা কিছু করতে গেলেই সবাই বলবেন পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে।’
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের পরিচালক আকন বলেন, ‘যে কেউ বন্যপ্রাণীর চামড়া ব্যবহার করে বিয়ে বা কোন অনুষ্ঠান করতে পারেন না। এমনকি হরিণের চামড়া সংগ্রহে রাখাও অপরাধ। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী, লাইসেন্স ও পারমিট প্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোনো বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর অংশ পাওয়া যায় অথবা তা থেকে উৎপন্ন দ্রব্য ক্রয়, বিক্রয়, আমদানি-রপ্তানি করেন, আর যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে সর্বোচ্চ এক বছরের সাজা অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে তিন বছরের সাজা অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়। পরদিন রাষ্ট্রপতি এই বিলে স্বাক্ষর করলে সেটি আইনে পরিণত হয়। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভের তীব্র দাবানল যায় দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গসহ আরও বেশকিছু রাজ্যে। বিতর্কিত এ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় দুই ডজনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।