সরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া চার শিক্ষক আসেন কালেভদ্রে। শিক্ষার্থীরা তাদের নামই জানে না। ১১ হাজার টাকায় নেয়া তিন ভাড়াটে শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। তাও পালা করে তাঁরা দায়িত্ব পালন করেন। এই চিত্র কুড়িগ্রাম সদরের ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
ব্রহ্মপুত্রের চর ভগবতিপুরের এই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম শিফটের ছুটি হয়েছে সবেমাত্র। লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি পরা শিক্ষক রেজাউল করিম বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি, বিস্কুটের হিসাবসহ অলিখিতভাবে প্রধান শিক্ষকের সব দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় মো. আসাদুজ্জামান নামের একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তা ছাড়া আনোয়ার হোসেন, ইলোরা হক ও শামস শাহরিয়ার নামের আরো তিনজন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন কাগজে-কলমে।
বাস্তবে সরকারি বেতন-ভাতাপ্রাপ্ত এই শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে যান কমই। তারা থাকেন কুড়িগ্রাম শহরে। তাদের বদলে ১১ হাজার টাকায় তিনজন প্রক্সি টিচার রেখেছেন। তারা হলেন রেজাউল করিম, আবুল হোসেন ও শেফালী আক্তার। শেফালী আক্তার দুই বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে প্রক্সি টিচার নিয়োগ হলেও বাকি দুজন ছয়-সাত বছর ধরে আছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রক্সি টিচাররা সবাই একসঙ্গে আসেন না, পালা করে আসেন।
প্রক্সি শিক্ষক আবুল হোসেন স্কুলে আসেন না। তিনি নাকি ছুটিতে! স্কুলে খাতা-কলমে ১৭৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে ক্লাসপ্রতি ৮-১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি।
প্রক্সি শিক্ষক শেফালী আক্তার বলেন, ‘স্যাররা মাঝেমধ্যে আসেন।’শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা প্রক্সি তিন শিক্ষককে চেনে। আসল শিক্ষকদের চেনে না। নামও জানে না।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, এলাকার লোকজনের মতামতের ভিত্তিতে তিনজন প্রক্সি শিক্ষক নিয়োগ দেয় হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সদরের আটটি বিদ্যালয়ে প্রক্সি শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।