লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্কুল ফাঁকি দিয়ে মাঠে জমি জরিপের কাজ করছেন চরজাঙ্গালিয়া এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লকিয়ত উল্যাহ। সোমবার সকালে ছুটি না নিয়ে তিনি রামগতি উপজেলার তোরাবআলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে জমি জরিপের কাজ করছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেনের নজরে আসায় বিকালে তাকে শোকজ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা খাতা তার কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে গেছেন তিনি। ওই দিন কোনো শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারেনি। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন আবুল বাছেত খোকন নামে বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক। জানা যায়, প্রায় সময়ে চরজাঙ্গালিয়া এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লকিয়ত উল্যাহ ছুটি না নিয়ে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাবলিক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে জমি জরিপের কাজে যান। এ নিয়ে স্কুলে অন্যান্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ছাড়াও বিগত দিনের ওই বিদ্যালয়ের সব আয়-ব্যয় হিসাব না দিয়ে সভাপতি সরাফ উদ্দিন বাবুলের সঙ্গে আঁতাত করে দু’জনেই ভোগ করছেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সঙ্গে ওই স্কুলের অভিভাবক সদস্যদের মাঝে বাক-বিতণ্ডাও হয়েছে বহুবার। চরজাঙ্গালিয়া এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শ্রী কৃষ্ণ দাস জানান, প্রধান শিক্ষক লকিয়ত উল্যাহ মিয়া ম্যানেজিং কমিটির কোনো সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ না করে নিজের খেয়াল খুশিমত স্কুল পরিচালনা করছেন।
পাবলিক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে জমির পরিমাপ করেন তিনি। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সরাফ উদ্দিন বাবুল বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অনেক অভিযোগও রয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ছিদ্দিক জানান, প্রধান শিক্ষক প্রায়ই সময়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে মানুষের জমি জরিপের কাজে যান।
এটা তো নতুন কিছু নয়। জানতে চাইলে চরজাঙ্গালিয়া এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লকিয়ত উল্যাহ মিয়া বলেন, আমি স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে পারিবারিক কাজে বাইরে আছি। শিক্ষকদের হাজিরা খাতা আপনার কক্ষে তালাবদ্ধ কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকরা আগামীকালকে হাজিরা দেবে সমস্যা কি।
কমলনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এফএম আব্দুল ওয়াজেদ তালুকদার জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আসায় প্রাথমিকভাবে তাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাবের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং তাকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাবের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।