খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শালবন এলাকায় আক্তার হোসেন (৩৮) নামে এক স্কুল শিক্ষককে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আক্তারের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আক্তার খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার লেলাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় মধ্য শালবন এলাকায় নিজ বাসার সামনে ৮/৯ জন দুর্বৃত্ত আক্তার হোসেনকে এলোপাতারি মারধর করে এবং মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে হামলার জন্য পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে আক্তার হোসেনের পরিবার। এ ব্যাপারে আক্তার হোসেনের পিতা ও পৌর কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন বলেন, কয়েকটি ইজিবাইকে করে বাসার সামনে স্থানীয় শামিম, মিরাজ, মাইনউদ্দিনসহ ৮/৯ জন পৌর মেয়র রফিকুল আলমের চিহ্নিত লোকজন আমার সামনে ছেলেকে কুপিয়েছে। এই মেয়রের জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছি। নিজের রক্ত ঝরিয়েছি। ছেলেসহ আমাকে ৩২টি মামলার আসামি হতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেই মেয়র আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।
আহত আক্তার হোসেনের ছোট ভাই সাইফুল হোসেন বলেন, আমার ভাই (আক্তার হোসেন) মেয়র মো. রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করে। মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে মেয়র ও তার লোকজন আমার ভাইকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। মামলা প্রত্যাহার না করায় সুযোগ বুঝে আমার ভাইয়ের উপর মেয়রের নির্দেশে তার লোকজন হামলা করে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটো বলেন, ‘শামিম নামের এক যুবকের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার (১৮ মার্চ) যেহেতু উপজেলা নির্বাচন, তাই অপ্রীতিকর ঘটনায় এড়াতে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।'
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২ কোটি টাকার মানহানির মামলা করে আহত আক্তার হোসেন। মামলায় শহরের হাসপাতাল গেইট এলাকায় অনুমতি ছাড়াই সেমিপাকা ইমারত নির্মাণ করেছেন মর্মে মেয়র রফিকুল আলম ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে তার বিরুদ্ধে নোটিস দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য তা অপসারণ করার নির্দেশ দিয়ে তা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অফিসার ইনচার্জ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। এতে শিক্ষক হিসেবে তাকে অপমান করে দুই কোটি টাকার মানহানি করা হয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়।
আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেছে পুলিশ।