সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার স্কুলছাত্র ইমন হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আনাদায়ে ৬ মাস এবং আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রেজাউল করিম এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ছাতক থানার ব্রাহ্মণজুলিয়া গ্রামের বাসন্দা ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজন, একই থানার নোয়ারাই গ্রামের জায়েদ, রফিকুর রহমান ও উপজেলার বাতিরকান্দি গ্রামের সালেহ আহমদ (পলাতক)। চারজনের মধ্যে তিনজন কারাগারে রয়েছেন।
আদালতের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যডভোকেট কিশোর কুমার কর বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিষয়ে আমরা আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি বলেই আদালত জড়িতদের শাস্তি দিয়েছেন। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’ তিনি আরও বলেন, ‘আলোচিত এই মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, বর্তমানে হবিগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শহীদুল আমিন ও সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নিহতের মা বাবাসহ ২৩ জন।
আদালত সূত্র জানায়, ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী জহুর আলীর ছেলে ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানার কমিউনিটি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান ইমনকে ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা শিশু ইমনকে হত্যা করে। ৮ এপ্রিল মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিলেটের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিশু ইমনের হত্যাকারী স্থানীয় মসজিদের ইমাম সুয়েবুর রহমান সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিষের বোতল ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে। এমনকি বাতিরকান্দি হাওর থেকে ইমনের মাথার খুলি ও হাতের হাড় উদ্ধার করে এবং জড়িতদের গ্রেফতার পুলিশ। অপহরণ ও মামলা দায়েরের প্রায় সাড়ে ৭ মাস পর ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে বাদ দেন আদালত। অপর চার আসামির মধ্যে বাতির কান্দি গ্রামের সালেহ আহমদ ছাড়া একই গ্রামের রফিক, জায়েদ ও উপজেলা ব্রাহ্মণ জুলিয়া গ্রামের সুজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।