হাটহাজারী পৌর সদরের গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাছনিম সুলতানা তুহিনকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর আজ রোববার (২৮ জুলাই) শুনানি হবে। বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ শুনানির কথা রয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র সম্পর্কে বাদীর আপত্তি না থাকায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন। শুনানীকালে মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ওরফে মুন্না (২২) ও অপর দুই আসামি মুন্নার বাবা পল্লী চিকিৎসক শাহজাহান সিরাজ (৫২) এবং মুন্নার মা নিগার সুলতানকে (৪৫) আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে স্কুলছাত্রী তুহিনকে ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের লোমহর্ষক ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আকির জাবেদ মামলা দায়েরের প্রায় ১০ মাস পর গত ১০ জুলাই মামলাটির চূড়ান্ত চার্জশিট আদালতে দাখিল করে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিন।
আদালতে জমা দেয়া চার্জশিটে অভিযুক্ত তিন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চূড়ান্ত চার্জশিট আদালতে দাখিলের দিন অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির জন্য এ তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আদালত ওই দিন শুনানি না করে আজকে রোববার শুনানির দিন ধার্য করে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা শাহজালাল পাড়া সালাম ম্যানশনের ৪র্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে স্কুল ছাত্রী তাসনিম সুলতানা তুহিনকে (১৩) ধর্ষণের পর নির্মমভাবে খুন করে মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না। ওই সময় তুহিন চিৎকার দিলে মুন্না তার মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তুহিনের লাশ ওই ঘরের সোফার নিচে প্লাস্টিকের বস্তা ভরে গুম করে মুন্না।
ঘটনার ৩ দিন পর পালাতে গিয়ে মুন্না পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সোফার নিচ থেকে তুহিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
তখন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মুন্নার বাবা-মা পালিয়ে যায়। বর্তমানে মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না কারাগারে থাকলেও মামলার অপর দুই আসামি মুন্নার পিতা শাহ জাহান সিরাজ ও মাতা নিগার সুলতানা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন।
বর্তমানে মামলার প্রধান আসামি মুন্না কারাগারে থাকলেও মামলার চার্জশিটের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত অপর দুই আসামি মুন্নার বাবা-মার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছিল উচ্চ আদালত। নিয়ম অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলা দায়েরের ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিলের কথা থাকলেও তা অজ্ঞাত কারণে দেয়া হয়নি বলে দুই আসামি এতদিন পর্যন্ত উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিনে মুক্ত ছিল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. রিয়াদ উদ্দিন মুঠোফোনে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, জামিনে থাকা অপর দুই আসামি ঘাতক মুন্নার বাবা-মাকে জেল হাজতে প্রেরণের জন্য আজ রোববার বিজ্ঞ আদালতের কাছে আবেদন জানানো হবে। আশাকরি, আদলত তা আমলে নিয়ে তাদের জামিন বাতিল করতে পারে। অন্যথায় মামলার ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে বিবাদী পক্ষ হস্তক্ষেপ করবে।