লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টায় জবরদস্তি করে বিবস্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী হামিদুল ইসলামের (২২) বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করে এখন বিপাকে পড়েছে ঐ ভিক্ষুক পরিবারটি। থানা থেকে অভিযোগ তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবার। হামিদুল ইসলাম ঐ এলাকার মেছের আলীর ছেলে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস (কালীবাড়ি) এলাকায় ঘটনা সম্পর্কে জানতে সাংবাদিকরা গেলে শতশত নারী-পুরুষ ‘লম্পট’ হামিদুল ইসলামের কঠোর শাস্তি চেয়ে তার কু-কীর্তির বর্ণনা দেয়। এর আগে (২৭ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার বিকালে ঐ এলাকার প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
থানায় ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী মেয়েটির প্রতিবন্ধী বাবা ভিক্ষাবৃত্তি করেন আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তারা নিজেদের কাজে চলে যান। বাড়িতে রেখে যান স্কুল পড়ুয়া মেয়েটিকে। জেএসসির টেস্ট পরীক্ষা চলায় মেয়েটি বাড়ির টুকিটাকি কাজ শেষে বিকালের দিকে ঘরে পড়তে বসে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী মেছের আলীর ছেলে লম্পট হামিদুল ইসলাম ঘরে ঢুকে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। মেয়েটির চৎকারে তার মা ও বড় ভাই ছুটে এসে লম্পট হামিদুলকে আটক করে তার বাবা-মাকে খবর দেয়। খবর পেয়ে লম্পট হামিদুলের বাবা-মা ও বোন এসে ছেলের বিচার না করে উল্টো মেয়েটিসহ তার মা ও বড় ভাইকে বেধড়ক মারধর করে তার ছেলেকে নিয়ে যায়। এতে মেয়েটিসহ তার মা ও ভাই গুরুতর জখম হয়।
এদিকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে লোকজন ছুটে এসে হামিদুল ইসলাম ও তার বাবা মেছের আলীর এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তারা এলাকাবাসীকেও অপমান করে। পরে এলাকাবাসী মেয়েটিসহ তার মা ও ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে দেন।
এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে হামিদুল ইসলামসহ ৪ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এদিকে থানা থেকে অভিযোগ তুলে না নিলে ভিক্ষুক পরিবারটিকে প্রাণনাশের হুমকিসহ এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে হামিদুলের পরিবার বলে জানান মেয়েটির মা।
এ বিষয়ে লম্পট হামিদুল ইসলাম ও তার বাবা মেছের আলীর সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলেও দেখা পাওয়া যায়নি। তবে হামিদুলের মা হনুফা বেগম বলেন, এসব মিথ্যা কথা, তারা উল্টো আমার মেয়ের নামে বদনাম ছড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা হলে স্থানীয় সুজন (৩০), জগো (৩০), বিশাদু (২৮), হজরত আলী (৫০), খায়রুজ্জামান, ৫৫), বিলাতন নেছা (৫০), একাদশীসহ (৩৫) এলাকার শতশত নারী-পুরুষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লম্পট হামিদুলের এই জঘন্য অন্যায়ের যদি সুষ্ঠু বিচার না হয় তাহলে প্রয়োজনে আমরা এর জন্য আন্দোলন করব। সভাসমাবেশ ও মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাইবো।
নওদাবাস ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নরেশ মেম্বার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে যাতে আর বারাবাড়ি না হয় এবং এলাকায় বসে মুরুব্বিদের নিয়ে সুষ্ঠ বিচার করা যায়, সে বিষয়ে আমি দুই পক্ষের সাথে কথা বলেছি।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) উমর ফারুক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবিষয় আমি একটি লিখিত অভিযোগ পত্র পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।