বরগুনার আমতলীতে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ে দেয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার পশ্চিম গাজীপুর গ্রামে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী জান্নাতি পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের আলী মাতুব্বরের মেয়ে ও গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। অপরদিকে বর মো. রেজাউল হাওলাদার উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামের মফেজ হাওলাদারের ছেলে ও পটুয়াখালী ডায়াবেটিস হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (এমএলএসএস)।
জানা যায়, শুক্রবার ওই ছাত্রীর সঙ্গে রেজাউলের দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা কাবিনে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পশ্চিম গাজীপুর মোল্লা বাড়ী জামে মসজিদে স্থানীয় বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা ফোরকান মিয়া। রোববার কনে জান্নাতিকে তার বাবার বাড়ি থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে বর পক্ষ তুলে নেয়ার দিনক্ষণ ঠিক হয়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের বাল্যবিয়ে হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা এ বাল্য বিয়ের সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করছেন।
ওই বিয়েতে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা মো. ফোরকান মিয়া দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা কাবিনে সপ্তম শ্রেণিতে স্কুল পড়ুয়া জান্নাতির বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন। ওই বাল্যবিয়ে অন্যায়। তদন্ত সাপেক্ষে বাল্যবিয়ের ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করছেন তারা।
বর মো. রেজাউল হাওলাদারের খালু মো. শহীদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রেজাউলের সাথে আলী মাতুব্বরে কন্যা জান্নাতির বিয়ে হয়েছে। কিন্তু মেয়ের বয়স হয়েছে কিনা তা আমি জানি না।
বর রেজাউল হাওলাদার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার স্ত্রী জান্নাতি গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
এ বিষয়ে জান্নাতির বাবা আলী মাতব্বরের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করা বিবাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা মো. ফোরকান মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদে জান্নাতির জন্ম সনদ দিয়ে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু ওই বিয়ের কাজ আমি সম্পন্ন করিনি।
গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিুকর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জান্নাতি আমার স্কুলের সপ্তম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। বিদ্যালয় বন্ধের আগেও ক্লাস করেছে। ওইটুকু মেয়ের বাল্যবিয়ে মেনে নেয়া যায় না।
আমতলী গাজীপুর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) মো. সুলতান হোসেন সিকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয় খোঁজ-খবর নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।