নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় ফাজেল আহম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠের জায়গা দখল করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম শেখ দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পিরোলী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম শেখ ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মাণের পর সুজল হোসেন নামে এক ভাড়াটিয়ার কাছে ১ হাজার ৭শ' টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। দোকানটির নাম সুজল বুক হাউস অ্যান্ড বিকাশ পয়েন্ট।
অবৈধ এ ঘরের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া মাঠে খেলাধুলাও করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েও কাজ হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইকবাল হোসেন জানান, সর্বশেষ ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভায় দোকানঘরটি অপসারণ করে বিদ্যালয়ের প্রবেশপথটি পুনরুদ্ধারসহ সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অবৈধভাবে নির্মিত দোকানঘরটি অপসারণের জন্য জেলা প্রশাসক, কালিয়া ইউএনও, এসিল্যান্ড, ইউনিয়ন তহসিলদার ও বোর্ড অফিসে আবেদন করা হয়। তবে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
স্থানীয় পেড়লি কলেজের ছাত্র মিনারুল ভূঁইয়া বলেন, আমি এই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলাম। অবৈধভাবে দোকানঘর তৈরির কারণে বিদ্যালয়ের রাস্তা দখল হয়ে গেছে। এতে মাঠের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া খেলার সময়ও সমস্যা হয়।
এদিকে, দখলদারের ভয়ে ফাজেল আহম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। পার্শ্ববর্তী পশ্চিম পিরোলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও মুখ খোলেননি।
এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম শেখ বলেন, সরকারিভাবে বন্দোবস্ত নিয়ে ঘর করেছি। অনেকেই বাজারের জায়গায় দোকানঘর তৈরি করেছে। আমারটা উচ্ছেদ করতে হলে অন্যদেরটাও উচ্ছেদ করতে হবে।
পেড়লি ইউনিয়নের সদস্য হামিদুল শেখ বলেন, এ ঘরটির কারণে শিক্ষার্থীরা ধুলো-কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। এ ঘর অপসারণের জন্য অনেকবার পদক্ষেপ নেওয়া হলেও নজরুল স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় বারবার সংশ্নিষ্ট ইউএনও অফিসে যোগাযোগ করেও কাজ হয়নি।
কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজমুল আলম বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। বন্দোবস্তের বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেব।
কালিয়ার ইউএনও নাজমুল হুদা বলেন, কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে কি-না তা জানা নেই। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।