ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাজির সিমলা এলাকায় স্কুল থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে একটি কারখানাতে অবৈধভাবে ব্যাটারি পুড়িয়ে চলছে বিষাক্ত সিসা উৎপাদনের কাজ। রাতের আঁধারে গোপনে চালানো ওই কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারণে নানা অসুবিধায় পড়েছে স্থানীয়রা। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। এ ছাড়া গবাদি পশু, গাছের ফল ও ফসলও আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার।
সরেজমিন দেখা যায়, কাজির সিমলা নজরুল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১০০ গজ দূরে জঙ্গলের ভেতরে অনেকটা জায়গা উঁচু করে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা। সামনে কোনো সাইনবোর্ড না থাকলেও কাছে গেলেই বোঝা যায়, ভেতরে একটি কারখানা রয়েছে। মজবুত টিনের গেটের ওপর লাগানো আছে সিসি ক্যামেরা। বাইরে তালা ঝুলানো, ভেতরে কোনো লোকজন নেই। ওই কারখানার আশপাশেই অনেক বসতবাড়ি ও ফলমূলের গাছপালা। কারখানার কারণে ব্যাহত হচ্ছে আশেপাশের ফসলি জমির উৎপাদন। পোড়া ব্যাটারির বিষাক্ত ধোঁয়া ঘাসের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। আর সেই ঘাস খেয়ে গৃহপালিত পশু আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। এ ছাড়া আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানায়, সিসা কারখানাটি সারা দিন বন্ধ থাকে। সন্ধ্যার পরপরই গাড়িতে করে মালামাল এনে কাজ শুরু হয়। আবার ভোর হওয়ার আগেই কাজ শেষ করে চলে যায় শ্রমিক ও কর্মচারীরা। রাতে ব্যাটারি গলানো শুরু হলে বিষাক্ত ধোঁয়ায় চারপাশ ছেয়ে যায়। ফলে আশপাশের বাড়িগুলোর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে।
কাজির সিমলা নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহাগ, রাসেল, সাবিনা, নিপা আক্তার, মারিয়া এবং কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুঁই জানায়, সন্ধ্যার পর পড়ার টেবিলে বসলেই বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তাদের চোখ জ্বালাপোড়া ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ফলে তারা ঠিকমতো পড়তে পারে না।
এ ব্যাপারে সিসা কারখানার মালিক সেলিম লস্কর জানান, তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে ছাড়পত্রের নির্দেশনা পালনে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। সময়, সুযোগ বুঝে এখান থেকে কারখানা স্থানান্তর করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাকির বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তারা দিনের বেলা কাজ করে না বলে সেখানে কাউকে পাইনি। শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’