যশোরের ঝিকরগাছার ছুটিপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষেতের আইল ও মানুষের বসতবাড়ির পাশঘেঁষে সরু রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ জন্য নানা ভোগান্তির পাশাপাশি কটু কথাও শুনতে হয় তাদের। শিক্ষকদের প্রায় বলা হয়—বসতবাড়ির ওপর দিয়ে বিদ্যালয়ে না যাওয়া-আসার জন্য।
নবম শ্রেণির নাজমুন নাহার শোভা বলে, ‘আমাদের স্থানীয় মশিয়ার রহমানের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করায় তিনি প্রায় বলেন, ‘এখান দিয়ে যেতে দেব না।’ একই শ্রেণির খাদিজা খাতুন ও জেরিন সুলতানা দোলা জানায়, সাড়ে তিন কিলোমিটার দূর থেকে তারা বাইসাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু মূল রাস্তা থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার রাস্তা না থাকায় মানুষের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। এ জন্য তাদের নানা ভোগান্তির পাশাপাশি অনেক সময় কটু কথাও শুনতে হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলিম বলেন, ‘১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ছুটিপুর বাজারের কোলঘেঁষে মূল রাস্তা থেকে ২০০ গজ দূরে ১০৪ শতক জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় বিদ্যালয়ের আসা-যাওয়ার জন্য রাস্তা দেয়ার শর্তে মশিয়ার রহমানকে নৈশপ্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে জুনিয়র পর্যন্ত এমপিও হওয়ায় সে বাদ পড়ে যায়। একপর্যায় মশিয়ার রহমান বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয় এবং বিদ্যালয়ে আসার রাস্তা দেয়ার কথা থাকলেও সে রাস্তা হতে দেয়নি। এখনো বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষক নন-এমপিওভুক্ত রয়েছেন। বিদ্যালয়ে বর্তমান ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে রাস্তা নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আসা-যাওয়ার রাস্তা না থাকায় অভিভাবকরাও তাঁদের মেয়েকে এ বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনীহা দেখায়।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এস এম জিল্লুর রশীদ বলেন, ‘ছুটিপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া ভালো হলেও যাওয়া-আসার রাস্তা ও অবকাঠামো ভালো নয়। বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তাটি হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’