স্কুলের হাজিরা যন্ত্র দ্বিগুণ দামে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলের হাজিরা যন্ত্র দ্বিগুণ দামে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

রাজশাহীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র স্থাপনের আগেই বাজারমূল্যের প্রায় দ্বিগুণ দামের রসিদ শিক্ষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যন্ত্রটির দাম ধরা হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। ‘ডিজিটাল সলিউশন লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে যন্ত্র কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকেরা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, কয়েক মাস আগেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ অক্টোবর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সব বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের সিস্টেম অ্যানালিস্টকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে যন্ত্রটির ১৫টি ‘স্পেসিফিকেশন’ দিয়ে বলা হয়, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে যাচাই করে সাশ্রয়ী মূল্যে নিজেদের পছন্দমতো ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয় করে বিদ্যালয়ে স্থাপন করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়ের ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এ ব্যাপারে কোনো ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এই নির্দেশনা অমান্য করে রাজশাহীতে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র কেনা শুরু হয়েছে। প্রথমেই তানোর উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হয়। যন্ত্র স্থাপনের আগেই উপজেলার ১২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের হাতে ‘ডিজিটাল সলিউশন লিমিটেড’–এর ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকার রসিদ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের নাম, ঠিকানা ও ওপরে তারিখ লেখার জায়গা ফাঁকা রেখে এই রসিদের নিচে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির স্বত্বাধিকারীর নাম ফয়সাল ইসলাম। এ নামেই স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রধান শিক্ষক জানান, যন্ত্রটি বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। অনেকে ৯ থেকে ১৩ হাজার টাকার মধ্যে যন্ত্রটি সরবরাহ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওপর থেকে তাঁদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যন্ত্র বসানোর আগেই ডিজিটাল সলিউশন লিমিটেডের ১৮ হাজার ৯৯৯ টাকার রসিদ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই রসিদে ডিজিটাল সলিউশনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে আলুপট্টি, দৈনিক বার্তা কমপ্লেক্স, রাজশাহী। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই ভবনে গিয়ে ডিজিটাল সলিউশন লিমিটেড নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। শিক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া মুঠোফোন নম্বরে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর নাম-পদবি বলতে রাজি হননি। আগাম রসিদ ও দামের ব্যাপারে পরে কথা বলবেন বলে জানান।

নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়ের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই গত ২৩ অক্টোবর এ নির্দেশনা দেওয়া হয়

রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকার সেল কম্পিউটারের স্বত্বাধিকারী এস এম সালেহীন জানান, মন্ত্রণালয় থেকে যে ডিজিটাল যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে, সেটি তাঁরা সাড়ে ৮ হাজার টাকায় সরবরাহ করতে পারবেন। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে লাগাতে দূরত্ব ভেদে আরও ২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ লাগবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোরের ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজিরা যন্ত্র স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তানোরে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোবাইদা খানম দায়িত্বে ছিলেন।

জানতে চাইলে গত বুধবার জোবাইদা খানম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষকেরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একটি কোম্পানির কাছ থেকে নিলে তদারকি সহজ হবে। আর তারা বিনা মূল্যে এক বছরের ইন্টারনেট সংযোগ দিতে চেয়েছে। এই সব বিবেচনায় ভালো মনে করে এটা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।

ইউএনও নাসরিন বানু বলেন, এটা গত অর্থবছরের কাজ ছিল। শিক্ষকেরা যন্ত্রটি লাগাচ্ছিলেন না। পরে মন্ত্রণালয় থেকে আবার চিঠি আসে। তখন শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় সভায় বসেন শিক্ষকেরা। সবার সম্মতি ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে যন্ত্রটি স্থাপন করলে ভালো হয়।

দামের ব্যাপারে ইউএনও বলেন, ‘আমার কাছে ওরা (ডিজিটাল সলিউশন) চেয়েছিল ১৬ হাজার। দামাদামি করলে আরও তো কম হওয়ার কথা। দামের ব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকেরাই জানেন। যেহেতু ইউএনওকে ওই কমিটিতে রাখা হয়নি, সে জন্য দামের ব্যাপারে আমি আর নাক গলাইনি।’

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057687759399414